কাতারকে হারিয়ে ইতিহাস বাংলাদেশের
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ কখনো গ্রুপ পর্ব পার হতে পারেনি। তাই আজ সুযোগ ছিল কাজে লাগাবার। আর সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইনজুরি টাইমের গোলে কাতারকে পরাজিত করে নক আউট পর্ব নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
ফিফা র্যাংকিংয়ে কাতার ৯৮তম, বাংলাদেশ ১৯৪তম স্থানে। র্যাংকিংয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে থেকেই এশিয়ান গেমস ফুটবলে মাঠে নামে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।
বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় বেকাসির প্যাট্রিয়ট চন্দ্রভাগা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয়।
এ ম্যাচে ড্র করলেও নক আউট পর্ব নিশ্চিত হয়ে যেত বাংলাদেশের। ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উজবেকিস্তানের কাছে ৩-০ গোলে হার দিয়ে শুরু করেছিল জামাল ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন দলটি। দ্বিতীয় ম্যাচে এগিয়ে থেকেও ১-১ গোলে ড্র করতে হয় শক্তিশালী থাইল্যান্ডের বিপক্ষে।
ম্যাচের শুরু থেকেই বল নিয়ন্ত্রণে রেখে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে কাতার। অন্যদিকে, প্রথমার্ধে খুব একটা আক্রমণ করতে পারেনি কোচ জেমি ডে’র দল বাংলাদেশ।
শুরু থেকেই বেশকটি সুযোগও মিলেছে কাতারের। ম্যাচের ২১তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে ফ্রি-কিক পায় কাতার। ফ্রি-কিক থেকে আলসাদির নেয়া দুর্দান্ত শট থামিয়ে দেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা।
ম্যাচের ২৭ মিনিটে আবারও সুযোগ পেয়েছিল কাতার। তবে লক্ষ্যহীন শট খেলে সেই সুযোগ নষ্ট করেন মেশাল আলশামারি। এরপর আক্রমণ জোরালো হয় কাতারের। আর তাতেই ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল তারা। তবে সতীর্থের কাছ থেকে আসা বল পেলেও লক্ষ্যহীন শট খেলেন হাতিম হাসানিন। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন কাতারের আদেল আল আহমেদ। গোলশূন্য অবস্থাতেই বিরতিতে যায় দু’দল।
বিরতির পর ইনজুরির কারণে গোলরক্ষক মারওয়ান বাদরেলদিনের বদলি হিসেবে মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে মাঠে নামান কাতারের কোচ উনাই মেলগোসা।
ম্যাচের ৪৯ মিনিটে আবদেল রহমানের ফাউলের শিকার হন শুশান্ত ত্রিপুরা। ছয় মিনিট পর আবারও তাকে ফাউল করেন হাতিম।
ম্যাচের ৬০ মিনিটে আরেকটি সুযোগ পেয়েছিল কাতার। কিন্তু ডি-বক্সের বাইরে থেকে হাজেম শেহাতার জোরালো শট পোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়।
এরপর ম্যাচের ৬৫ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল বিপলো আহমেদ। ডি-বক্সে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের কাটিয়ে ডান পায়ের জোরালো এক শট নেন তিনি। তবে তার দুর্দান্ত শট থামিয়ে দেন কাতার গোলরক্ষক। এক মিনিট পর মাহবুবুর রহমানকে উঠিয়ে বদলি হিসেবে মাসুক মিয়া জনিকে মাঠে নামান কোচ জেমি ডে।
ম্যাচের ৭৪ মিনিটে আরেকটি দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন বিপলো। তবে ডি-বক্সে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে বল মাঠের বাইরে চলে যায়।
নির্ধারিত সময়ে শেষে অতিরিক্ত মিনিটের খেলা চলছিল। বাঁ প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। এ সময় ডি বক্সে বল পেয়ে কাতারের একজনকে কাটিয়ে দলের হয়ে গোলটি করেন জামাল ভূঁইয়া।
এরপর কাতার গোল পরিশোধে মরিয়া হলেও আর কোনও সুযোগ দেয়নি বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।
১৯৭৮ সালে ব্যাংকক এশিয়ান গেমস থেকে শুরু। মাঝে দুই আসর (১৯৯৪ ও ১৯৯৮) ছাড়া এই এশিয়াডে নিয়মিতই অংশ নিয়ে আসছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। এশিয়ার আঞ্চলিক এই বহু-ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় এ পর্যন্ত মোট ২৩টি ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে মাত্র তিনটিতে। বাকি ২০টিতেই হেরেছে। কোনোবারই প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকাতে পারেনি। ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশকে ৩-০ এবং কাতারকে ৬-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউট পর্বে আগেই পা দিয়েছে উজবেকিস্তান।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে কাতারকে ২-০ গোলে হারানোর রেকর্ড ছিল বাংলাদেশের দখলে।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/আগস্ট ১৯, ২০১৮)