এশিয়ান গেমস ২০১৮
'দোষারোপেই কেটে যায় সময়, মন নেই খেলায়'
বাংলাদেশের হকি দল এশিয়ান গেমসে পাকিস্তানের কাছে ৫-০ গোলে হারার পর কার্যত যে কোনো ধরণের খেলায় ২০১৮ এশিয়ান গেমসে কোনো পদক পাওয়ার আশা শেষ হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের।
কিন্তু এবার কোনো পদক পায়নি বাংলাদেশের কোনো ক্রীড়াবিদ। বাংলাদেশের একজন ক্রীড়া সংগঠক পারভিন নাসিমা নাহার পুতুলের মতে, "দোষারোপের সংস্কৃতির একটা প্রতিচ্ছবি পদকহীন বাংলাদেশ।"
তিনি বলেন, "প্রত্যেকটা ফেডারশনের উচিৎ একটা ক্যালেন্ডার মেইনটেইন করা। কোথাও দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলন নেই, ভালো কোচ নেই, প্রত্যেক ফেডারেশনের টাকার ঘাটতি, সব মিলিয়ে এই ভরাডুবি।'
মিজ পুতুলের মতে, এর পরিবর্তনটা এটা একটা প্রক্রিয়া। যে টাকাটা আছে তা দিয়ে সেখানে পরিকল্পনামাফিক সেসব ফেডারেশনের পদকের সম্ভাবনা রয়েছে, তাদের সাথে বসে পদকের জন্য চেষ্টা করা উচিৎ। অন্তত ১০-১২টি ফেডারেশন তো পাওয়াই যাবে।
ফেডারেশন ও ক্রীড়া পরিষদের সমন্বয়হীনতাকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন পারভিন নাসিমা নাহার পুতুল। তিনি বলেন, "প্রতিটি ফেডারেশন গেমস শুরু হবার চার পাঁচ মাস আগে শুরু করে অর্থের জন্য দৌড়াদৌড়ি। এরপর শুরু হয় খেলোয়াড়দের প্রস্তুতি।"
এ সময় তিনি ক্রীড়া পরিষদ ও ফেডারেশন একসাথে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। মিজ পুতুলের মতে, "এই সংগঠনগুলো একসাথে বসতে চায়না, শুধু দোষারোপ করেই দায়মুক্ত হবার চেষ্টা করে, যার ফলে একটি পদকও আসেনি এবার।"
মূলত আর্চারী, শুটিং, সাঁতার এগুলো বাড়তি নজর দেয়ার কথা বলেছেন এই ক্রীড়া সংগঠক। একমাত্র স্বর্ণ পদকটি ২০১০ সালের গুয়াংজু এশিয়ান গেমসে ছেলেদের ক্রিকেট থেকে পাওয়া। এশিয়ান গেমসে কাবাডি থেকে সর্বোচ্চ সাতটি পদক পায় বাংলাদেশ।
২০১৪ সালের ইনচনের আসরে ক্রিকেটে মেয়েরা রৌপ্য এবং ছেলেরা ব্রোঞ্জ জিতেছিল। অপর ব্রোঞ্জ পদকটি এসেছিল মেয়েদের কাবাডি থেকে।
এশিয়ান গেমসের ১৮তম আসরে ১৪টি ডিসিপ্লিনে ৮৬জন ছেলে ও ৩১জন মেয়ে মিলিয়ে মোট ১১৭ জন অ্যাথলেট অংশ নেন।
বাংলাদেশের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার, তিনি টানা সাতবার জাতীয় পর্যায়ে ১০০ মিটার দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।
মিজ. শিরিন মনে করেন, একটা খেলোয়াড়ের মধ্যে যে প্রতিভা থাকে সেটার উন্নয়নের জন্যই ফেডারেশনকে ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, "একটা খেলোয়াড়ের মধ্যের ব্যাপারটা বের করে আনাটাই প্রশাসন ও প্রশিক্ষকের দায়িত্ব। আমার সামর্থ্য কতটুকু এটাও একটা এনালাইসিসের বিষয়।"
"আমাদের দেশের সুযোগ-সুবিধার ঘাটতি তো অবশ্যই কম, এর পাশাপাশি আমরা একদম সাদামাটা খাবার খাই, কোনো ফুড সাপ্লেমেন্ট থাকে না।"
মিজ. শিরিন মনে করেন, খেলোয়াড়দের ব্যর্থতা আছে ঠিক, তবে অবকাঠামোগত দিকটাও পরিবর্তন করা দরকার।