চট্টগ্রামে ইউএনওর বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ
বিশেষ প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের জন্য এনজিওগুলোর কাছ থেকে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ৩২টি এনজিও প্রতিষ্ঠানকে এক হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে বাধ্য করায় এনজিও কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
উপজেলা এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন জানান, এনজিওগুলো থেকে চাঁদা নেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
আসছে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। প্রতিবছর উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার অধীনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর দিবসটি উদযাপনের জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহম্মদ আশরাফ হোসেনের কার্যালয়ে এনজিও প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নাজনীন ফেরদাউস মজুমদার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ূন খানসহ বেশ কয়েকটি এনজিওর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক এনজিও প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, দিবসটি উদযাপন নিয়ে বৈঠকে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নাজনীন ফেরদাউসকে কোনো কথাই বলতে দেননি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন খান। ওই বৈঠকে দিবসটি উদযাপনের জন্য উপজেলার ৩২টি এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে বাধ্যতামূলক এক হাজার টাকা করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। চাঁদাগুলো আদায় করার দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা অপকারকে।
একাধিক এনজিও কর্মকর্তা জানান, উপজেলায় কিছু এনজিও রয়েছে, যারা শুধু মাইক্রোক্রেডিট কর্মসূচি নিয়ে কাজ করে। তাদের কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। এ ছাড়া টাকাগুলো আদায়ের পর কোনো রশিদও দেওয়া হচ্ছে না।
উন্নয়ন সংস্থা অপকারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলমগীর জানান, শুধু মিরসরাই উপজেলায় নয়; পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোতেও একই ভাবে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। সারা বছরের বিভিন্ন দিবস উদযাপনের জন্য এনজিওগুলো থেকে চাঁদা আদায় করা হয়। এ নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নাজনীন ফেরদাউস মজুমদার বলেন, নারী দিবসের অনুষ্ঠান সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য এনজিওগুলোকে এক হাজার টাকা করে প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়। এখানে চাঁদা আদায়ের প্রসঙ্গ আসবে কেন?
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, অনুষ্ঠানটির খরচের জন্য এনজিওগুলোকে কমপক্ষে এক হাজার টাকা করে চাঁদা দিয়ে সহযোগিতা করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এনজিওগুলোর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রশাসনিকভাবে সহযোগিতা করা হয়। তাহলে তারা সরকারি অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করবে না কেন?
(দ্য রিপোর্ট/কেএইচসি/ইইউ/এপি/এজেড/মার্চ ০৫, ২০১৪)