শ্রম আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শ্রমিকদের উৎসব ভাতা বাধ্যতামূলক ও দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে পরিবর্তন এনে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন- ২০১৮ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে বৈঠকে বিভিন্ন শ্রম ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের বিধান রেখে খসড়াটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
শফিউল আলমবলেন, শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য ২০০৬ সালে প্রথম এই আইনটি করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে এটির অনেক বড় সংশোধন হয়। প্রায় ৯০টি ধারা সংশোধন হয়। আজকেও অনেকগুলো ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আইএলও (বিশ্ব শ্রম সংস্থা) এর কনভেনশন অনুযায়ী এটাকে (শ্রম আিইন) আপডেট করার জন্য অর্থাৎ শ্রমবান্ধব পলিসি সব জায়গায় যাতে নিশ্চিত হয় সেটার জন্য আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইনে মালিক ও শ্রমিকদের অসদাচরণ বা বিধান লঙ্ঘনের জন্য শাস্তি সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড। আগে কারাদণ্ডের পরিমাণ ছিল ২ বছর।
বাংলাদেশে ২০০৬ সালের শ্রম আইন কার্যকর রয়েছে। বিভিন্ন শ্রম সংস্থা ও শ্রমিক সংগঠনের দাবির মুখে ২০১৩ সালে শ্রম আইন সংশোধন করা হলেও তা যথেষ্ট হয়নি বলে আলোচনা ছিল।
এর পর থেকেই আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), আন্তর্জাতিক ক্রেতা জোট এবং বিভিন্ন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন শ্রম আইন ফের সংশোধনের দাবি তোলে। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকার দেশে-বিদেশে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে।
এরপর শ্রম আইন সংশোধনের খসড়া করে তা আইএলওতে পাঠানো হয়। আইএলওর পর্যবেক্ষণ আমলে নিয়ে মালিক, শ্রমিক ও সরকারি প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত ত্রিপক্ষীয় কমিটি আইনটির খসড়া চূড়ান্ত করে।
প্রচলিত আইনে দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত কারণে শ্রমিকের উত্তরাধিকারীরা এক লাখ টাকা এবং স্থায়ী সম্পূর্ণ অক্ষমতার জন্য এক লাখ ২৫ হাজার টাকা পাওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু এই ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী, আইএলওসহ সব দেশীয় শ্রমিক সংগঠনের অব্যাহত দাবি ছিল।
নুতন আইনে এই অর্থ দ্বিগুণ করে দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ ২ লাখ টাকা, স্থায়ীভাবে সম্পূর্ণ অক্ষম হয়ে পড়লে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হচ্ছে।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৮)