কলকাতায় ভেঙে পড়ল সেতু
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় একটি রেললাইনের ওপর দিয়ে যাওয়া ফ্লাইওভারের একাংশ ভেঙে পড়ার পর অনেক হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এখনো অনেকে ধ্বংসস্তুপের ভেতর আটকা পড়েছেন বলে আশংকা করা হচ্ছে। খবর আনন্দ বাজারের
পত্রিকাটি জানাচ্ছে, শহরের বুক কাঁপিয়ে ফের ভেঙে পড়ল সেতু। এ বার দক্ষিণ শহরতলির মাঝেরহাট ব্রিজ। শহরের অন্যতম ব্যস্ত এই সেতুটি আচমকাই ধসে পড়ে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪ টে নাগাদ। সেতুর ভাঙা অংশের সঙ্গে সঙ্গে নীচে পড়ে যায় একটি মিনি বাস, তিনটি প্রাইভেট কার, দুটি অ্যাপ ক্যাব এবং দুটি বাইক। কত জনের মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। আহত অনেকে। তবে ভাঙা সেতুর নীচে একটি টিনের ছাউনির ঘরে কয়েক জন এখনও আটকে আছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
সেতু ভেঙে পড়ার পর পরই উদ্ধারকাজে নেমে পড়েন স্থানীয় লোকজন। হতাহতদের নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতাল এবং সিএমআরআই-এ। কিছু ক্ষণের মধ্যেই উদ্ধারকাজে নামে দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল। সরকারি ভাবে ডাকা না হলেও, উদ্ধার কাজে হাত লাগান সেনাবাহিনীর জওয়ানরাও। উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থল থেকে ৯ জনকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে এক জনের মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। সিএমআরআই-এ ভর্তি করানো হয়েছে ১০ জনকে।
গত ছ’ বছরের মধ্যে এই নিয়ে তিনটি সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটল শহর কলকাতায়। এবং তিনটিই শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলিতে। ২০১৩ সালের ৪ মার্চ মধ্যরাতে ভেঙে পড়েছিল উল্টোডাঙার ওভারব্রিজ। এর পর ২০১৬-র ৩১ মার্চ ভেঙে পড়ে নির্মীয়মাণ পোস্তা সেতু। প্রথম ঘটনায় কোনও মৃত্যু না হলেও, দ্বিতীয় ঘটনায় মারা যান ২৭ জন। আরও ৮০ জন জখম হয়েছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সেতুর মাঝের অংশ ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ে। সেতুর উপরে যানবাহনগুলি ছিটকে পড়ে। বাস এবং বিভিন্ন গাড়ি-বাইকের আরোহীরা গুরুতর আহত হন। ঘটনার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখানে পৌঁছন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। ঘটনাস্থলে যান পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পুলিশ কমিশনার এবং পুলিশের ডিজি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরে এখন দার্জিলিঙে।সেখান থেকেই তিনি উদ্ধার এবং আহতদের চিকিত্সার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন।আগামিকাল তাঁর শহরে ফেরার কথা। সন্ধ্যাবেলায় ঘটনাস্থলে যান রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তিনি বলেন, “এই সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল পুর্ত দফতর এবং রেল। আমি জানি না তারা এই সেতুটির পরিস্থিতি সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল ছিল কি না। ঘটনার তদন্তে সব স্পষ্ট হবে।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট বার্তায় জানান, ‘কলকাতায় সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমারসমবেদনা।আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
খিদিরপুর ও বেহালার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সেতুটি ৪০ বছর আগে তৈরি করেছিল পোর্ট ট্রাস্ট। পরে সেটি পূর্ত দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এখন এই সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে পূর্ত দফতর। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দাবি করেছেন, এটা ৪০ বছরের পুরনো সেতু। এখনও পর্যন্ত তাঁর কাছে মৃত্যুর কোনও খবর নেই। যাঁরা আটকে ছিলেন, তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/সেপ্টেম্বর ০৪,২০১৮)