খালেদা জিয়ার চিঠি: অস্থায়ী আদালতে আসতে অস্বীকৃতি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারের অস্থায়ী আদালতে আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বিশেষ এই আদালতের বিচারককে চিঠিতে জানিয়েছেন, তিনি আদালতে আর আসবেন না। এ কারণে তাকে আদালতে হাজির করতে পারেনি কারা কর্তৃপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে এ বিষয়ে অবহিত করেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়া জামিনে থাকবেন কি-না সে বিষয়ে তার আইনজীবীদের কাছে জানতে চেয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রধান আসামির অনুপস্থিতিতেই জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার চলতে পারে কি না সে বিষয়েও বিচারক আইনজীবীদের কাছে জানতে চান।
এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীর বক্তব্য শোনার জন্য বৃহস্পবিার দিন রেখেছেন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামান। বুধবার রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে অবস্থিত ঢাকার অস্থায়ী ৫ নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান শুনানির দিন ধার্য করেন। খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত হননি। আদালত দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে শুরু হয়ে সোয়া ১টা পর্যন্ত চলে। মুলতবি ঘোষণার আগে বিচারক ড. মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমার কাছে একটি চিঠি এসেছে।
এতে খালেদা জিয়া বলেছেন, তিনি আর আদালতে আসবেন না।’ এ অবস্থায় প্রধান আসামির অনুপস্থিতিতে মামলার কার্যক্রম চলতে পারে কি না, সে ব্যাপারে আইনগত ব্যাখ্যা হাজির করার জন্য আসামিপক্ষের আইনজীবীদের নির্দেশ দেন আদালত। খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া এক দরখাস্তের মাধ্যমে এক মাসের শুনানি মুলতবি চান। তিনি বলেন, যে প্রক্রিয়ায় কারা অভ্যন্তরে আদালত গঠন করা হয়েছে, তা সঠিক হয়নি। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ওই বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এক মাস শুনানি মুলতবি চান তিনি। ওই চিঠিতে বলা হয়, আদালতে পরিবেশ নেই। উন্মুক্ত আদালত না। এখানে স্বাভাবিক পরিবেশে বিচার-সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা প্রবেশ করতে পারেন না। এ ছাড়া খালেদা জিয়া অসুস্থ। কারাগারে থাকা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে। ওই রিটের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সার্বিক বিবেচনায় এক মাসের সময় চান তারা। এরপর দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল বলেন, মামলাটি আজ (বুধবার) যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ধার্য রয়েছে। এক দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করছেন, অন্যদিকে আদালত বসা নিয়ে প্রশ্ন করছেন।
এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সময় আবেদন করেন। তারা বলেন, আমাদের একটু যুক্তিসংগত সময় দেন। তখন বিচারক বলেন, কালকে (বৃহস্পতিবার) আপনারা এ বিষয়ে শুনানি করবেন। ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। এ ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে এ মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দেন। সেদিনই তাকে পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর থেকে ৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন। এই ‘বিশেষ কারাগারে’ সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ব্যক্তিগত এক গৃহকর্মীও রয়েছেন।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/সেপ্টেম্বর ১২,২০১৮)