শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পদ্মার ভাঙন কবলিত এলাকায় নদী খনন করে গতিপথ পরিবর্তন করে ভাঙন রোধে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তিনটি ড্রেজার পাঠানো হয়েছে।

একটি ড্রেজার সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নড়িয়া এসে পৌঁছেছে। এ ড্রেজার ইতোমধ্যে নদী খননের কাজ শুরু করে দিয়েছে। বাকি দুটি ড্রেজার পৌঁছানোর পরে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করবে।

নদীর তীব্র স্রোতের কারণে বাকি দুটি ড্রেজার পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে বলে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

গেলো তিন মাস যাবত নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচর ও কেদারপুর ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ড ও নড়িয়া পৌরসভার দুটি ওয়ার্ড পদ্মা নদীর অব্যাহত ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে কমপক্ষে ছয় হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদরাসা, রাস্তা-ঘাটসহ বিশাল বিশাল দালান-কোঠা নদীতে বিলীন করে নিয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরও হাজার হাজার বাড়ি-ঘর, শতশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাকি অংশ, নড়িয়া বাজারসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।

গত তিনদিন যাবত নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ভাঙনের তীব্রতা কমে যায়। ভাঙন কবলিত পদ্মাপাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি। পানি কমতে থাকলে পদ্মা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে আপদকালীন সাত কোটি টাকার জিও ব্যাগ ফেলেও ভাঙন ঠেকাতে পারছে না।

গত জানুয়ারি মাসে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পদ্মার ডান তীর রক্ষার জন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য একনেক বৈঠকে এক হাজার ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের মধ্যে নদী ড্রেজিং ও নদীর পাড়ে সিসি ব্লক ফেলার কথা রয়েছে।

গত তিন দিন পূর্বে নদী ড্রেজিংয়ের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় তিনটি ড্রেজার পাঠিয়েছে। এর মধ্যে মহেশখালী থেকে একটি ড্রেজার ইতোমধ্যে নড়িয়া এসে পৌঁছেছে। বাকি দুটি ২-১ দিনের মধ্যে পৌঁছে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নদী ভাঙন কবলিত এলাকার পান্না বেগম দুঃখ করে বলেন, আমার বাড়ি-ঘর সহায় সম্বল সবই নদী গিলে খেল। এখন ড্রেজার আসছে আমাদের রক্ষা করতে।

জাহাঙ্গীর হোসেন নামের স্থানীয় একজন বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ভাঙনের তীব্রতা কমেছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি। পানি কমলে আবার ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

এ ব্যাপারে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের জানান, একটি ড্রেজার নড়িয়ায় পৌঁছে কাজ শুরু করেছে। নদীর তীব্র স্রোতের কারণে ড্রেজার সময়মতো পৌঁছতে পারছে না। বাকি দুটি ২-১ দিনের মধ্যে চলে আসবে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮)