রাবি প্রতিনিধি : বহুল প্রতীক্ষিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দশম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর)। সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। উপাচার্যের বাসভবনে রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। দশম সমাবর্তন উপলক্ষে নতুন সাজে সেজেছে রাবি ক্যাম্পাস।

আচার্যের উপস্থিতি-অনুপস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে বেশ ক’বার স্থগিত হয়েছিল এই সমাবর্তন। তাই অনুষ্ঠিতব্য সমাবর্তনকে ঘিরে এবার প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে দেশের বৃহৎ এই বিদ্যাপীঠে। বহুল প্রতীক্ষিত সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় সময় গুনছেন রাবির গ্র্যাজুয়েটরা।

সমাবর্তনকে সামনে রেখে এরইমধ্যে বিভিন্ন প্রস্তুতি শেষ করেছে রাবি কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে প্রস্তুত করা হয়েছে সমাবর্তনের মঞ্চ। বিশেষ করে রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, পূর্বের নয়টি সমাবর্তনের তুলনায় এবারের আয়োজনটি অনেক বেশি জাঁকজমকপূর্ণ হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দশম সমাবর্তন অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল’ ও ছাত্রদের জন্য জাতীয় নেতা ‘শহীদ এ এইচএম কামারুজ্জামান হল’ নামে দুইটি দশ তলা বিশিষ্ট আবাসিক হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন রাষ্ট্রপতি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ।

এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ইমেরিটাস আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন বক্তব্য রাখবেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখবেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। অনুষ্ঠানে উপমহাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ও সেলিনা হোসেনকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রি প্রদান করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ।

আয়োজন শেষে বিকেল ৫টায় রাবি স্টেডিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। সেখানে গান পরিবেশন করবেন দেশের বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনসহ বিভিন্ন শিল্পী। এমন এক জমকালো সমাবর্তন অনুষ্ঠানের প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন নিবন্ধনকৃত ছয় হাজারের বেশি গ্রাজুয়েট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় নিবন্ধিত গ্রাজুয়েটদের আসন গ্রহণ হবে, বিকেল ৩টায় সমাবর্তন শোভাযাত্রা বের করা হবে। এদিকে, সমাবর্তন উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সমাবর্তনের দিন বহিরাগত কাউকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আইডি কার্ড নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে অবস্থিত ভাসমান দোকানগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষক কুমার কর্মকার জানান, দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে বহুল প্রত্যাশিত দশম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার অধ্যাপক এমএ বারী জানান, সমাবর্তনটিতে দুই দফায় রেজিস্ট্রেশন চলে। এতে ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে স্নাতকোত্তর, এমফিল, পিএইচডি, এমবিবিএস, বিডিএস ডিগ্রি অর্জনকারীদের নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হয়। দশম সমাবর্তনে অংশ নিতে মোট ৬ হাজার নয় জন গ্রাজুয়েট নিবন্ধন করেছেন।

সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রোক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, সমাবর্তনটিকে সফল করার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান স্পটগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এবার জাঁকজমকপূর্ণভাবে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮)