বিএনপির জনসভা চলছে, প্রধান অতিথি খালেদা!
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দুর্নীতি মামলায় কারান্তরীণ থাকা খালেদা জিয়াকে প্রধান অতিথি রেখেই জনসভার কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি।
প্রায় এক বছর পর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির ওই জনসভায় সভাপতিত্ব করছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে জনসভার কর্মসূচি শুরু হয়।
এর আগেই সকাল ১০ টা থেকে জনসভা স্থলে আসতে শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। ব্যানার, ফেস্টুন, হেডার, দলীয় প্রতীক ধানের শীষের রেপ্লিকা, নামাঙ্কিত টি শার্ট পরে দলে দলে মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে হাজির হন তারা।
ভ্যাপসা গরম ও তীব্র রোদের কারণে সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মী ও সমর্থকরা সমাবেশ স্থলের বাইরে ফুটপাতে, সড়কে এবং পাশের রমনা পার্কে জটলা বেঁধেছেন। সমাবেশস্থলের চেয়ে আশ-পাশেই তাদের অবস্থান বেশি।
যদিও ডিএমপির দেওয়া ২২ শর্তের মধ্যে অন্যতম শর্ত ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, অনুমোদিত স্থানের বাইরে সড়কে অথবা ফুটপাতে সমবেত হওয়া যাবে না, জনসভার ২ ঘণ্টা পূর্বে মানুষ জনসভাস্থলে আসতে পারবে, মিছিল নিয়ে জনসভায় আসা যাবে না।
সমাবেশে আসা হাজার হাজার নেতাকর্মী সমর্থক স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত করে রেখেছে সমাবেশস্থল এবং এর আশ-পাশের এলাকা। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। ছোট ছোট ইউনিটে ভাগ হয়ে নেতাকর্মীরা নিজ নিজ ইউনিটের নেতার নামেও স্লোগান দিচ্ছেন।
জনসভায় এরইমধ্যে উপস্থিত হয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদু চৌধুরীসহ শীর্ষ নেতারা।
এদিকে জনসভার মূল এজেন্ডা সম্পর্কে বিএনপির তরফ থেকে পরিষ্কারভাবে কিছু না বললেও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, জনসভায় সাত দফা দাবি ও ১২টি লক্ষ্য’র কথা ঘোষণা করবে বিএনপি। দাবিগুলো হচ্ছে— খালেদা জিয়ার মুক্তি, সাজা বাতিল, দলটির নেতাকর্মীর নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নতুন মামলা না দেওয়া, তফসিলের আগেই সংসদ ভেঙে দেওয়া ও সরকারের পদত্যাগ, আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ না করা, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং ইভিএম ব্যবহার না করা।
সাত দফা দাবির পাশাপাশি ১২টি লক্ষ্যও জাতির উদ্দেশে তুলে ধরা হবে বলে জানা গেছ। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে— রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সুশাসন নিশ্চিত করা, প্রতিহিংসার রাজনীতির অবসান, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দলীয়করণের বদলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারপতি নিয়োগ এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, সশস্ত্র বাহিনীকে আরো আধুনিক ও শক্তিশালী করা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, সব নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা, স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ, কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদকে মদদ না দেওয়া, কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দেওয়া এবং আয়ের বৈষম্য অবসানকল্পে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৮)