দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সিটিসেলের নামে ৩৮৩ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলার তদন্তে এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক ও তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (১ অক্টোবর) প্রধান কার্যালয়ে সকাল ৯টা ৫০ মিনিট থেকে কমিশনের উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. সামসুল আলম তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন।

সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তারা হলেন- এবি ব্যাংকের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও পরিচালক এম ওয়াহিদুল হক, পরিচালক মো. ফিরোজ আহমেদ, প্রাক্তন পরিচালক এম এ আউয়াল ও অধ্যাপক মো. ইমতিয়াজ হোসেন।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর তাদের তলব করে চিঠি দেওয়া হয়। ওই তলবি নোটিশে আগামী ২ ও ৩ অক্টোবর বর্তমান ও প্রাক্তন মিলিয়ে আরো ৮ পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়।

অর্থ আত্মসাতের ওই মামলার আসামি বিএনপি নেতা এম মোরশেদ খান ও তার স্ত্রী নাছরিন খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তারা হাজির হননি।

২০১৭ সালের ২৮ জুন রাজধানীর বনানী থানায় করা মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ খান, তার স্ত্রী, সিটিসেলের এমডি মেহবুব চৌধুরীসহ মোট ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের মূল কোম্পানির নাম প্যাসিফিক টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড (পিবিটিএল)। এম মোরশেদ খান এর চেয়ারম্যান, তার স্ত্রী নাছরিন খানও একজন পরিচালক।

এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সিটিসেলের নামে এ বি ব্যাংক থেকে অনিয়মের মাধ্যমে সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

দেনার দায়ে ২০১৬ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া সিটিসেলের হাত ধরেই দেড় যুগ আগে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন সেবার যাত্রা শুরু হয়েছিল।

১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিএল) নামে টেলিকম সেবা পরিচালনার লাইসেন্স পায় বর্তমান সিটিসেল। পরের বছর হংকং হাচিসন টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে বিটিএল নাম বদলে হয় হাচসন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (এইচবিটিএল)।

১৯৯৩ সালে মোরশেদ খানের মালিকানাধীন প্যাসিফিক মটরস ও ফারইস্ট টেলিকম মিলে এইচবিটিএল এর শেয়ার কিনে নিলে এ কোম্পানির মালিকানায় পরিবর্তন আসে। কোম্পানির নাম বদলে হয় প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড।

প্যাসিফিক মটরস যখন সিটিসেলের মালিকানায় আসে, মোরশেদ খান তখন মন্ত্রীর পদমর্যাদায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিনিয়োগ বিষয়ক বিশেষ দূতের দায়িত্বে। আর এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে সিটিসেল যখন লাইসেন্স পায়, মোরশেদ খান তখন ছিলেন জাতীয় পার্টির কোষাধ্যক্ষ।

একমাত্র অপারেটর হওয়ার সুযোগে সিটিসেল বিএনপি সরকারের সময়ে একচেটিয়া ব্যবসা করে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর আরো কোম্পানিকে মোবাইল ফোন সেবার লাইসেন্স দেওয়া হলে সেই একচেটিয়া ব্যবসার অবসান ঘটে। কোম্পানিতে ২০০৪ সালে বিনিয়োগ করে সিঙ্গাপুরের সিংটেল। কিন্তু ব্যবসার আর প্রসার ঘটেনি।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ কোম্পানির ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক মোরশেদ খানের প্যাসিফিক মোটরস লিমিটেড।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/অক্টোবর ০১, ২০১৮)