দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ইউটিউবে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার দায়ে দুই শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়েছে। রাজধানীর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টর এলাকা থেকে শুক্রবার (৫ অক্টোবর) রাতে তাদের আটক করে র‌্যাব-১।

শনিবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।

তিনি জানান, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ এলাকার তরুণ খালিদ বিন আহম্মেদ (৩০)। খালিদ ২০১৪ সালে স্থানীয় একটি কলেজে বিবিএতে ভর্তি হন। ২০১৬ সালে ছোটভাই গোলাম মাওলা নাহিদের মাধ্যমে ইউটিউবে একটি চ্যানেল খোলেন। নাম দেন এসকে টিভি। এই চ্যানেলে তখন থেকে রাষ্ট্রবিরোধী উস্কানিমূলক বিভিন্ন ভিডিও আপলোড করতে থাকেন তিনি।

তিনি আরো জানান, খালিদ ২০০৪ সালে রাজধানীর বাড্ডাআলাতুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০০৬ সালে হাজীগঞ্জ দেশগাঁও ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ২০১৪ সালে হাজীগঞ্জ আইডিয়াল কলেজ অব এডুকেশনে বিবিএতে ভর্তি হন তিনি। তার বাবা নূর আহম্মেদ জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

আর খালিদের সহযোগী হিজবুল্লাহ ২০১৩ সালে হাজীগঞ্জ থেকে এসএসসি ও ২০১৫ সালে এইচএসসি পাস করেন। বর্তমানে তিনি মহাখালীর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। খালিদের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে গত দেড় বছর ধরে তিনিও এসকে টিভিতে ভিডিও আপলোড করে আসছিলেন।

র‌্যাব-১ এর সিও বলেন, এসকে টিভির অ্যাডমিন খালিদ বিভিন্ন ভিডিওতে ভয়েস দিতেন এবং হিজবুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিতর্কিত বিভিন্ন ছবি সংগ্রহ করে এডিট করে আপলোড করতেন। তারা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর ও ভিডিও সংগ্রহ করে ইচ্ছেমতো তথ্য সংযোজন করে ভিডিও আকারে প্রকাশ করে আসছিলেন।

সম্প্রতি সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে এসকে টিভির চ্যানেলে বিতর্কিত ভিডিও আপলোড করা হয় জানিয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বলেন, কোটা ও নিরাপদ সড়কের আন্দোলনেও এ দুজন মনগড়া বক্তব্য সম্বলিত ভিডিও প্রকাশ করেন।

অনেক সময় বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের ভিডিও ফুটেজটা আসল নিলেও তার মধ্যে ভয়েসটা থাকতো তাদের মনগড়া। এ ধরনের মিথ্যাকে প্রশ্রয় দিয়ে তারা উস্কানি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছেন।

এসকে টিভিতে বিপুল সংখ্যক সাবস্ক্রাইবার ছিল জানিয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, চ্যানেলটিতে রাষ্ট্রবিরোধী বিরূপ সমালোচনা, গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানহানিকর গুজব প্রচার করে দেশে-বিদেশে হেয় করার চেষ্টা চালানো হয়েছে।

অনলাইনে এসব কার্যক্রম প্রতিনিয়তই মনিটরিং করা হচ্ছে, ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম কেউ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-১ সিও বলেন, প্রাথমিকভাবে এই চ্যানেলের সঙ্গে দুইজনই জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আরও কেউ জড়িত কি-না কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় এসকে টিভি পরিচালিত হতো কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/অক্টোবর ০৬, ২০১৮)