তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু

কবি বললেন, 'আমার ৭১ তম জন্মদিনে সবাই আনন্দ করছে, আমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। আর আমি ভাবছি আমার দিনতো ফুরিয়ে আসছে। বললেন মৃত্যুর ভয় পাই না। ভয় পাই অসুস্থতাকে। একা থাকি , কখন একা অসুস্থ হয়ে পড়ি। পড়ে থাকি সেই ভয়ে থাকি সব সময়।'

এই শঙ্কা তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। তাকে মানে কবি হেলাল হাফিজ কে। যে কিনা একদিন নিষিদ্ধ সম্পাদকীয় কবিতায় আহ্বান জানিয়েছিলেন-

‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
মিছিলের সব হাত
কন্ঠ
পা এক নয় ।

সেখানে সংসারী থাকে, সংসার বিরাগী থাকে,
কেউ আসে রাজপথে সাজাতে সংসার।’

তিনি রোববার (০৭ অক্টোবর,২০১৮) সন্ধ্যায় যখন জাতীয় প্রেসক্লাবে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন তখন ভাবছিলাম-কবি শেষ পর্যন্ত শঙ্কিত তার ভবিষ্যৎ নিয়ে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ঋদ্ধ হয়েছে তার অনবদ্য লেখায়।

একথা তো ঠিক-হেলাল হাফিজ বাংলাদেশের একজন আধুনিক কবি যিনি বিংশ শতাব্দীর শেষাংশে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তাঁর কবিতা সংকলন ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশিত হওয়ার পর অসংখ্য সংস্করণ হয়েছে। ওই গ্রন্থটির ১৯ টি সংস্করণ প্রকাশিত হলেও কবি পরে গ্রন্থ প্রকাশের ক্ষেত্রে নিস্পৃহ ছিলেন। ২৬ বছর পর ২০১২ সালে বের হয় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’। তিনি সাংবাদিক ও সাহিত্য সম্পাদক হিসাবে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কাজ করেছেন। দেরীতে হলেও ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন।

আমরা চাই কবি নিশ্চিন্ত হোক কোনো শঙ্কা নয়-রাষ্ট্র তার পাশে থাকবে। তিনি আমাদের মাঝে চিরানন্দে বেঁচে থাকুক। দীর্ঘায়ু হোন।

লেখক: সম্পাদক, দ্য রিপোর্ট

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/অক্টোবর ০৮,২০১৮)