গ্রেনেড হামলা : রায় পড়ছেন বিচারক
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সামবেশে গ্রেনেড হামলায় মামলার রায় পড়া শুরু হয়েছে।
বুধবার (১০ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিচারক শাহেদ নূরউদ্দিন আদালতে পৌঁছান। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এজলাসে প্রবেশ করেছেন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের এ বিচারক। তার কিছুক্ষণ পর তিনি রায় পড়া শুরু করেন।
এদিকে এ রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসায় অস্থায়ী আদালত ও এর আশপাশের এলাকায় সকাল থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সারাদেশে সতর্কাবস্থানে রাখা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
এছাড়া এ মামলায় গ্রেফতার ৩১ আসামিকে সকাল ৮টার কিছু পর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ১ ও ২ থেকে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের গারদে এনে রাখা হয়।
রায় শুনতে নৃসংশ এ হামলায় আহত-নিহতদের স্বজনরাও উপস্থিত হয়েছেন বকশিবাজার এলাকায়। তাদের প্রত্যাশা, এ বর্বরোচিত ঘটনার ন্যায় বিচার পাবে তারা।
বুধবার সকাল থেকেই আদালত চত্বরকে ঘিরে নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা। এর মধ্যে সকাল ১০টার দিক থেকেই আদালতে আসতে থাকেন রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। সকাল ১১টা ২০ মিনিটের দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারসহ কাশিমপুর ১ ও ২ নম্বর কারাগার থেকে লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ৩১ আসামিকে আদালতে নিয়ে আসা হয়।
এর মধ্যে বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন চলে এসেছেন খাস কামরায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি এজলাসে উঠবেন।
সকাল ১১টার দিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, বিচারকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই চলে এসেছেন। এখন এজলাসে বসলেই বিচার কাজ শুরু হবে।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী কিছুটা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ২০০৪ সালে যে বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটেছিল, তা বর্ণণা করার ভাষা আমাদের জানা নেই। ১৪ বছর পর আজ সেই কাঙ্ক্ষিত রায়ের দিন এসেছে। আজ আকাশও কাঁদছে। আমরা অপেক্ষা করছি, কারণ ২৪ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। সেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে দেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। হাওয়া ভবনে তারেক রহমানের নির্দেশে ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হয়েছিল। মুফতি হান্নানের নেতৃত্বে বাবর, পিন্টু, মুফতি হান্নানের সহযোগিতায় এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের চক্রান্ত করা হয়েছিল। আজ সে সেসব নৃশংশ ঘটনার রায় আসছে।
১৪ বছর আগের নৃশংস গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক জিয়া ও হামলার সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা লুৎফুজ্জামান বাবর।
এই মামলার ৩১ আসামি হলেন— কারাবন্দি ৩১ আসামিরা হলেন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, সামরিক গোয়েন্দা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম, পুলিশের সাবেক আইজি শহিদুল হক, খোদা বক্স ও আশরাফুল হুদা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, ঢাকা সিটি করপোরেশেনের সাবেক কাউন্সিলর আরিফুল ইসলাম আরিফ, সিআইডির সাবেক তিন কর্মকর্তার মুন্সী আতিকুর রহমান, আব্দুর রশীদ ও রুহুল আমিন, পাকিস্তানি নাগরিক আব্দুল মজিদ ওরফে ইউসুফ ভাট ওরফে আব্দুল মাজেদ ভাট, হরকাতুল জিহাদ ও অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের নেতা মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, আব্দুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা ওরফে জিএম, মাওলানা আব্দুল হান্নান ওরফে সাব্বির, মাওলানা আব্দুর রউফ, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে অভি, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডাক্তার আবু জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, শাহাদাত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে খাজা ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আব্দুর রাজ্জাক, রফিকুল ইসলাম সবুজ ওরফে খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে শামিম ওরফে রাশেদ, উজ্জ্বল ওরফে রতন ও আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/অক্টোবর ১০, ২০১৮)