মাধ্যমিকে আইসিটির সব শিক্ষক এমপিওভুক্ত হচ্ছেন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: এ সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে এসে দেশের সব নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) করার পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
সম্প্রতি এই সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
এই প্রসঙ্গে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে বিধি মোতাবেক নিয়োগ পাওয়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নিয়োগ যাচাই করেই তাদের এমপিওভুক্ত করা হবে। এমপিওভুক্ত যেসব নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এখনও শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি, সেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ দিলে তারাও এমপিওভুক্তির সুযোগ পাবেন।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের শিক্ষক আগে ছিল না। কম্পিউটার বিষয়টি আবশ্যিক ছিল না নিম্ন মাধ্যমিকে। শুধু নবম ও দশম শ্রেণিতে কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়টি চতুর্থ বিষয় হিসেবে বিষয়টি পড়ানো হতো। ২০১২ সালে সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, ষষ্ট থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) পড়াতে হবে হবে। তখন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশ্ন ওঠে, বিষয়টি কোন শিক্ষক পড়াবেন। কারণ হিসেবে বলা হয়, নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে আইসিটি শিক্ষক নেই। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়, গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের শিক্ষকরা বিষয়টি পড়াবেন।
২০১২ সালে কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়টি পড়ানোর সিদ্ধান্ত হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেয়। ২০১৩ সালের এমপিওভুক্তির পরিমার্জিত নীতিমালায় কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়টি প্যাটার্নভুক্ত করা হলেও শিক্ষক এমপিওভুক্তির কোনও সুযোগ রাখা হয়নি। তবে শিক্ষানীতি অনুযায়ী ‘কম্পিউটার শিক্ষা’ বিষয়টি ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ নামে সংশোধন করে তা বাধ্যতামূলক করা হয়।
কিন্তু ২০১২ সালের ১৩ নভেম্বর পরিপত্র জারি করে অনির্দিষ্ট কালের জন্য এমপিও দেওয়া বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সে কারণে এসব শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারেননি।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১২ জুন জারি করা জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সুযোগ রাখা হয়।
নীতিমালা অনুযায়ী অনুযায়ী গত ১ আগস্ট মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ের শিক্ষকদের এমপিও দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর গত ১০ অক্টোবর আদেশ জারি করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির নির্দেশনা দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। মন্ত্রণালয়ের এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে মাউশি।
এদিকে, গত ১০ অক্টোবর এমপিও নির্দেশনা জারি হলেও আগে থেকেই কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ের ৬৬ জন শিক্ষক বেতনভুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব শিক্ষককে এমপিওভুক্তির বিষয়টি মন্ত্রণালয় ও মাউশি খতিয়ে দেখছে।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে কীভাবে আগেই ৬৬ জন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হলেন।’
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/অক্টোবর ১১, ২০১৮)