সাংবাদিকরা শ্রমিক থেকে ‘গণমাধ্যমকর্মী’ হচ্ছেন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সব ধরনের গণমাধ্যমকর্মীর জন্য চাকরির শর্ত ঠিক করে ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন-২০১৮’-এর খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
এই আইনে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরতদের ‘গণমাধ্যমকর্মী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। ইংরেজিতে বলা হবে ‘মাস মিডিয়া এমপ্লয়িজ’। এর আগে গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির সুযোগ-সুবিধা ও অন্যান্য শর্তাবলি শ্রম আইনে পরিচালিত হতো। তবে এবার কর্মীদের জন্য আলাদা আইনের প্রস্তাব করা হলো।
সোমবার (১৫ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন ২০১৮’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সরকার কর্তৃক গঠিত পরিদর্শন কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির নিয়মাবলি স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান প্রণয়ন করবে। এক্ষেত্রে কর্মীদের সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা হবে সর্বোচ্চ ৩৬ ঘণ্টা। এর বেশি হলে তাদের ওভারটাইম দিতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা গ্রুপ বিমার আওতায় অন্তর্ভুক্ত হবেন।
আইনে গণমাধ্যমকর্মীদের ছুটির বিষয়ে বলা হয়েছে, কর্মীরা বছরে ক্যাজুয়েল লিভ পাবেন ১৫ দিন। তাদের অর্জিত ছুটি জমা হবে ১০০ দিন। আগে তা ৬০ দিন ছিল। এছাড়া পূর্ণ বেতনে দুটি উৎসব ভাতা ও ১০ দিন উৎসব ছুটি পাবেন কর্মীরা।
এতে আরও বলা হয়, নারী গণমাধ্যমকর্মীরা সরকারি ছুটির মতো সমহারে মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটানোর সুযোগ পাবেন। এছাড়া কর্মীরা তিন বছর পর পর ৩০ দিনের জন্য সবেতন ছুটি পাবেন।
আইনে কর্মীদের ওয়েজ বোর্ড অনুসারে ন্যূনতম বেতন পরিশোধের পাশাপাশি তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে। এই ফান্ডে কর্মীরা চাকরির এক বছরের মাথায় চাঁদা জমা দিতে পারবেন। মালিক পক্ষকেও ওই ফান্ডে সমহারে চাঁদা জমা দিতে হবে। আগে প্রভিডেন্ট ফান্ডে টাকা জমা দিতে প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের চাকরির বয়স দুই বছর পূর্ণ হতে হতো।
এদিকে আইনে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমকর্মী ও মালিক পক্ষের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হলে ‘এডিআর’র মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি করতে হবে। মালিক পক্ষকে এই আইনের সব বিধান পালন করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে বা লঙ্ঘিত হলে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। আইনে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা না থাকলেও জরিমানা অনাদায়ে আদালত কারাদণ্ড দিতে পারেন।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/অক্টোবর ১৫, ২০১৮)