ঢাবি প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ওইদিনের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর গঠিত কমিটি তদন্ত শেষে এই প্রমাণ পেয়েছে।

ওই তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন ও সুপারিশ সোমবার (১৫ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১২ অক্টোবর (শুক্রবার) পরীক্ষা গ্রহণের দিন সকাল ৯টা ১৭ মিনিটে একজন ভর্তিচ্ছু মেসেঞ্জারের মাধ্যমে হাতে লেখা উত্তরসহ প্রশ্ন পায়। তদন্ত কমিটি এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবর, গণমাধ্যমকর্মীদের সাক্ষাৎকার ও অন্যান্য মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে তদন্ত করে এই প্রমাণ মিলেছে বলে কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এছাড়া তদন্ত কমিটি তাদের সুপারিশে জানিয়েছে, জালিয়াতির মাধ্যমে কোনো শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়লে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি সংস্কার করার সুপারিশ করেছে কমিটি।

গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুক্রবার রাতেই তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ।

তদন্ত কমিটির প্রধান মুহম্মদ সামাদ জানান, মেসেঞ্জারে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র আসার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে। ওই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল প্রযুক্তি আইনে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় ছয়জন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। যাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রিমান্ডে নিয়েছে।

শুক্রবার বেলা ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ৮১টি কেন্দ্রে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরীক্ষার পূর্বে বেলা ৯টা ১৭ মিনিটে অনেক ভর্তিচ্ছুর হোয়াটস অ্যাপ, মেসেঞ্জারে সাদা কাগজে উত্তর লেখা সংবলিত প্রশ্ন আসে।

অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে ফাঁস হওয়া ৭২টি প্রশ্ন ও উত্তর হুবহু মিলে যায়।

উল্লেখ্য, সোমবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৪৯ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি ই-মেইলে পাঠানো হয়, যেখানে বলা হয় আগামীকাল মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) ‘ঘ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ করা হবে।

পরে ‘অতি জরুরি প্রেস বিজ্ঞপ্তি’ শিরোনামে দুপুর ১টা ০৪ মিনিটে পাঠানো অপর একটি ই-মেইলে ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত স্থগিত করার কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, উপাচার্য দফতরের অ্যাসাইনমেন্ট অফিসারের পাঠানো ভুল তথ্যের কারণেই প্রথম মেইলটি দেওয়া হয়েছিলো। সেটি স্থগিত করা হলো। পরীক্ষা ফল প্রকাশ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত যথাসময়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/অক্টোবর ১৬, ২০১৮)