সন্ত্রাসীরা আত্মসমর্পণ না করলে চরম পরিণতি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কক্সবাজার প্রতিনিধি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, সন্ত্রাস-দস্যুতা মানুষের জন্য সুখকর কিছু নিয়ে আসতে পারে না। তাই দেশের মানুষের সার্বিক শান্তির স্বার্থে যা কিছু করার দরকার তা করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুন্দরবন ও কক্সবাজারের উপকূলীয় অপর সব দস্যু বাহিনীকেও দ্রুত আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এসব সন্ত্রাসী দস্যুরা দ্রুত আত্মসমর্পণ না করলে চরম পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে তাদের।
শনিবার (২০ অক্টোবর) কক্সবাজারের মহেশখালীতে র্যাবের আয়োজনে দস্যু বাহিনীর এক আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
দুপুরে মহেশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে র্যাব এ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
চট্টগ্রামস্থ র্যাব-৭ এর প্রধান লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন - র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, কক্সবাজার-২ আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার-৩ আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুখ, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তাফা, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজারের মেয়র মুজিবুর রহমান, মহেশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান হোছাইন ইব্রাহীম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরীসহ বিভিন্নজন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে আধুনিক এসএমজিসহ ৯৪টি বন্দুক ও প্রায় ৮ হাজার রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন উপকূলীয় মহেশখালী-কুতুবদিয়া এলাকার ৬ দস্যু বাহিনীর ৪৩ জন সদস্য।
র্যাব সূত্র জানায় -কক্সবাজারের উপকূলীয় মহেশখালী-কুতুবদিয়া দ্বীপসহ সমগ্র উপকূলীয় এলাকায় বর্তমানে একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। একাধিক বাহিনীর শত শত সদস্য সমদ্র ও উপকূলীয় পাহাড়ি এলাকায় সমান তালে ত্রাস চালিয়ে আসছিল।
সর্বশেষ গত কয়েক দিন আগেও মহেশখালীর সোনাদিয়াসহ আশপাশের এলাকায় একাধিক ট্রলার দস্যুতার শিকার হয়। একইভাবে উপকূলে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাস করে আসছিল।
এমন পটভূমিতে র্যাবের উদ্যোগে বড় আয়োজনের মাধ্যমে এ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এদিকে মহেশখালী-কুতুবদিয়া এলাকার এসব দাগি সন্ত্রাসী আইনের আওতায় চলে আসার ঘটনাকে বেশ মুগ্ধ উপকূলীয় এলাকার মানুষ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার সুন্দরবনে আত্মসমর্পণ করা দস্যু বাহিনীর সদস্যদের পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য নানা উদ্যেগ নিয়েছে। দেশের সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক নির্দেশনায় সেসব পরিবারকে আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও দেয়া হবে, যাতে তারা সন্ত্রাসের অন্ধকার জগৎ থেকে ফিরে আসার পর ভালো কোনো কাজ করে জীবন চালাতে পারেন। প্রয়োজনে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিকল্প কাজের জন্য তাদেরকে যোগ্য করে গড়ে তোলা হবে।
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি ও দেশ-বিদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার জন্য জাতির জনক কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নেই, তার বিকল্প উদাহরণ তিনি নিজেই।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিদেশিরাও এখন বাংলাদেশে কাজ করতে আসতেছেন, বর্তমানে শান্তিপূর্ণ এ বাংলাদেশে আড়াই লাখেরও বেশি বিদেশি লোক নিরাপদে কাজ করছেন।
কক্সবাজারের এ অঞ্চলে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি মহেশখালী-কুতুবদিয়া উপকূল সন্ত্রাসমুক্ত করার ঘোষণা দেন। যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদেরকে আইনি সহয়তা করার জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/অক্টোবর ২০, ২০১৮)