দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার যে ছুটি নিয়েছেন তা রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।

রোববার (২১ অক্টোবর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সাহেবকে আক্রমণ করে আওয়ামী লীগ নেতারা যে বক্তব্য দিচ্ছেন তা সন্ত্রাসী আচরণ। তিনি এ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কেন ছুটি নিয়েছেন, নাকি নিতে বাধ্য হয়েছেন তাও রহস্যজনক। ইসিকে সর্বোচ্চ চাপে রেখে কাজ করাচ্ছে সরকার।’

তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কতিপয় কমিশনার ও কর্মকর্তারা নিজেরা যে আচরণবিধি তৈরি করছেন তা সুষ্ঠু নির্বাচন পরিপন্থি। কারণ এ কমিশনের কয়েকজন আধিকারিক কমিশনের ক্ষমতা কমিয়ে সরকারকে দিতে চান। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করার নজির পৃথিবীর কোথাও নেই। অথচ প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের সময় সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টির আইন করতে চাচ্ছেন।’

রিজভী বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন নিয়ে চারদিকে নৈরাশের ছবি। সরকার পুনরায় একতরফা নির্বাচন করার জন্য এখন এজিদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি হচ্ছে। ইইউ ইসিকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে তারা আগামী সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। অন্যান্য দাতা ও সাহায্য সংস্থা, বিদেশি মিশন থেকেও নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘সরকারের ইচ্ছায় খালেদা জিয়া যে সুচিকিৎসা পাবেন না সে আশঙ্কা আমরা পূর্বেই করেছিলাম। এ বিষয়ে বার বার আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে অবহিত করা হয়েছে। বিএসএমএমইউতে তার যে ফিজিওথেরাপি দেয়া হয় সেটিও পর্যাপ্ত নয়। তার ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য, অথচ এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ছিল।’

রিজভী বলেন, ‘আমি আবারও খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিতের জন্য তার পছন্দ মতো চিকিৎসক এবং হাসপাতালের ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘বেআইনি ভাবে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৯ অক্টোবর। আমরা আগেই বলেছি, বিবাদীর অনুপস্থিতিতে মামলার রায় নির্ধারণ পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। সরকার প্রধানের নির্দেশেই সম্পূর্ণ প্রতিহিংসামূলক এ রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে। সে জন্যই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আদালতের ওপর চাপ সৃষ্টি করে রায়ের দিন ধার্য করে নিয়েছে। আরেকটি ফরমায়েশি রায় হতে যাচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য দেশবাসী প্রহর গুনছে। এ আদালতে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে কিনা সেই প্রশ্নও মানুষের মনে জেগে উঠছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ-দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/অক্টোবর ২১, ২০১৮)