দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : পৃথিবীর দীর্ঘতম সেতু উদ্বোধন করল চীন। মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) ঝুহাইতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং দীর্ঘ ৯ বছর ধরে তৈরি হওয়া এ সেতুটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। খবর- বিবিসির।

সেতুটির দৈর্ঘ্য ৫৫ কিলোমিটার বা ৩৪ মাইল। এটি দক্ষিণ চীনের হংকং ও ম্যাকাওসহ আরও ৯ শহরকে যুক্ত করেছে।

এ সেতু দিয়ে চার ঘণ্টা সময়ের রাস্তা মাত্র আধা ঘণ্টায় পার হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে চীনা সেতু কর্তৃপক্ষ।

সেতুটি নির্মাণে সাগরে দুটি কৃত্রিম দ্বীপও তৈরি করা হয়েছে। পার্ল নদীর ওপর দিয়ে গেছে সেতুটির প্রায় ৩০ কিলোমিটার। এর পর সেতুটির ৬ দশমিক ৭ কিলোমিটার সাগরের নিচে টানেলে পরিণত হয়েছে।

জাহাজ চলাচল অব্যাহত রাখতে এবং দুটি কৃত্রিম দ্বীপ এ জন্যই তৈরি করা হয়েছে বলে ব্যাখ্যা দিয়েছে সেতু নির্মাণ কর্তৃপক্ষ।

কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, সেতুটি শক্তিশালী মাত্রার ভূমিকম্প প্রতিরোধী। এটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে চার লাখ টন স্টিল, যা দিয়ে ৬০টি আইফেল টাওয়ার নির্মাণ করা সম্ভব।

সব মিলিয়ে সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার কোটি ডলার।

প্রকৌশলী ও স্থাপত্যের দিক থেকে দুর্দান্ত হলেও সেতুটি নিয়ে সমালোচনা চলছে খোদ চীনেই।

অত্যধিক নির্মাণ ব্যয়ের কারণে কত সময়ের মধ্যে এ ব্যয় তুলে নেয়া যাবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন চীনের অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা।

এ ছাড়া নির্মাণকাজ চলাকালীন ১৮ শ্রমিক নিহত হওয়ার ব্যাপারটিও সমালোচিত হচ্ছে।

চীনা কর্মকর্তারা বলছেন, দেশটির অর্থনীতিতে সেতুটি প্রায় ১ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন ডলার যোগ করবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্নকথা। কেননা সেতুতে যাত্রী ও পর্যটকদের জন্য শাটল বাস ছাড়া অন্য কোনো গণপরিবহন চলবে না।

এ কারণে লক্ষ্যমাত্রার টোল আদায় হবে না বলে তারা সংশয় প্রকাশ করছেন।

এ প্রসঙ্গে বিবিসি নিউজ চাইনিজের তানিয়া চান বলেন, যথেষ্ট পরিমাণ গাড়ি চলতে না দিলে এটি কীভাবে টেকসই হবে আমি নিশ্চিত নই। আমি নিশ্চিত যে নির্মাণ ব্যয় আমরা ফেরত আনতে পারব না।

বিবিসি চাইনিজের হিসাবে টোল থেকে বছরে আসবে মাত্র আট কোটি ৬০ লাখ ডলার।

এ কারণে ইতিমধ্যে অনেকেই সেতুটিকে 'শ্বেতহস্তী' নামে আখ্যায়িত করছে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/অক্টোবর ২৩, ২০১৮)