হাসপাতাল থেকে কারাগার আদালতে খালেদা জিয়া
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) বেলা ১১টা ২৩ মিনিটে তাকে হাসপাতালের ৬১২ নম্বর কক্ষ থেকে বের করা হয়। পরে একটি কালো এসইউভিতে করে কারাগারের পথে রওনা দেয়া হয়।
বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে খালেদা জিয়া কারাগারের আদালতে পৌঁছান। এসময় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। পুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনী ছিল তৎপর।
কারা সূত্র জানায়, নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারের জন্য নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগার ভবনে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাস বসানোর আদেশ জারির পর এ মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়।
কারা সূত্র জানিয়েছে, আজ বিএনপি চেয়ারপারসনের আদালতে হাজিরা আছে। তাই হাসপাতাল থেকে তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাজিরা শেষ হলে তাকে কারাগারে নেওয়া হতে পারে।
সকাল থেকেই বিএসএমএমইউয়ের চারপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য।
একইভাবে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারের আশপাশেও।
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার আদালত স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপন হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকালে কারা ভবনে বিশেষ এজলাসে আদালতের কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ মাহমুদুল কবীরের আদালতে এদিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
সরকারের সঙ্গে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বিশেষ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ শুরুর পর প্যারোলে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আলোচনায় আসে।প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই দফা সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করেছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও সম্প্রতি বলেছেন, বিএনপির খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি চাইলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপেও খালেদা জিয়ার জামিনের জোরালো দাবি করেন বিএনপি নেতারা।
সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে ঐক্যফ্রন্ট খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়নি, জামিন চেয়েছে।
তবে আদালত যদি তাকে জামিন দেন, তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই বলে জানান তিনি।
গত ৩০ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া অপর আসামিদের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখা হয়েছে।
সেদিন আদালত বলেন, রায়ের কার্যকর অংশটুকু ঘোষণা করা হচ্ছে।সাজা বাতিলের তিনটি আপিল (খালেদা জিয়া, সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ) খারিজ করা হল। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা রিভিশন আবেদনের রুল যথাযথ ঘোষণা করা হল। খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হল।
ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান গত ৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার বাত, ডায়াবেটিস, কোমরে ব্যথাসহ কিছু সমস্যা রয়েছে।বিএসএমএমইউতে তার চিকিৎসা চলছিল।
গত ৬ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। তখন থেকে তিনি বিএসএমএমইউয়ের ৬১২ নম্বর কেবিনে ছিলেন।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/নভেম্বর ০৮, ২০১৮)