বিনিয়োগকারীদের কেউ মুনাফা করিয়ে দেবে না- বিএসইসি চেয়ারম্যান
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শেয়ার ব্যবসায় কোন বিনিয়োগকারীকে কেউ মুনাফা করিয়ে দেবে না।
এছাড়া কারও ক্ষতি হলেও তা কেউ লাঘব করে দেবে না। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীকেই তার পুঁজি সংরক্ষনের দায়িত্ব পালন করতে হবে। যার জন্য বিনিয়োগকারীদের জ্ঞানের বিকল্প নেই। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের জন্য বিএসইসি বিনিয়োগ শিক্ষা বিষয়ক একটি কর্মশালায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন এ কথা বলেছেন।
সোমবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসির নিজস্ব কার্যালয়ে এই বিনিয়োগ শিক্ষা কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির পরিচালক রেজাউল করিম।
খায়রুল হোসেন বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হল জ্ঞানভান্ডার তৈরী করা। যাতে বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজির সংরক্ষণ ও মুনাফা করতে পারে। যাতে বিনিয়োগকারীরা নিজেই শেয়ার বেচা-কেনার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
তিনি বলেন, কমিশন ডিসক্লোজার ভিত্তিতে একটি কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দেয়। এক্ষেত্রে ইস্যু ম্যানেজার ও নিরীক্ষক সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিষয়ে সব ঠিক আছে বলে জানানোর পরে কমিশনের কিছু করার থাকে না। কারণ কমিশন সরেজমিনে ওই কোম্পানির আর্থিক হিসাবের সত্যতা যাছাই করতে পারে না। আর এমনটি করতে গেলে আইপিও অনুমোদনে ৩ বছর সময় লেগে যাবে।
বর্তমানে প্রত্যেকটি কোম্পানির ওয়েবসাইটে প্রসপেক্টাস প্রকাশ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন খায়রুল হোসেন। এক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা ওই প্রসপেক্টাসে প্রদত্ত তথ্য নিয়ে রিপোর্ট করতে পারেন। এক্ষেত্রে কোন কোম্পানির প্রসপেক্টাসের সঙ্গে বাস্তবতার গরমিল পাওয়া গেলে, আইপিওতে আবেদনের আগ মুহূর্তেও তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আইপিও অনুমোদন পাওয়া কোম্পানি কাছে চাদাঁ না পেয়ে একটি গ্রুপ আদালতে রিট করে বলে জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান। এদেরকে প্রতিহত করার জন্য সাংবাদিকদের কাছে আহ্বান করেছেন তিনি।
খায়রুল হোসেন বলেন, আইপিওতে সঠিক দর পায় না বলে দীর্ঘদিন ধরে উদ্যোক্তাদের অভিযোগ ছিল। যার আলোকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির তথ্য বিচার বিশ্লেষণ করে দর নির্ধারন করে। কিন্তু এরমধ্যেও কোম্পানি ও যোগ্য বিনিয়োগকারীরা যোগসাজোশ করতে শুরু করে। যা প্রতিরোধে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ শেয়ারে দর প্রস্তাব করার সংশোধনী করা হয়েছে। এরপরেও যদি যোগ্য বিনিয়োগকারীরা কারসাজি করে, তাহলে কমিশনের অসহায়ত্ব প্রকাশ ছাড়া কিছুই করার থাকবে না।
আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ শেয়ারবাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরী করতে চাইতে পারে বলে মনে করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। যাতে বিএসইসি নিয়মিত সার্ভেলেন্সের মাধ্যমে নজড়দারি করছে। এক্ষেত্রে লেনদেনে কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শেয়ারবাজারে অনেক সংস্কার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এখন বিভিন্ন ফিক্সড ইনকাম, সিকিউরিটিজ থেকে শুরু করে বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন, ইসলামীক ও ডেরিভেটিভ পণ্য আনার জন্য কাজ করছি। ২০১৯ সালের মধ্যে আপনারা শেয়ারবাজারে ব্যাপক পরিবর্তন দেখতে পারবেন।
শেয়ারবাজারের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিল্প, সেবা, অবকাঠামো ইত্যাদি খাত অনেক এগিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করেন খায়রুল হোসেন।
কর্মশালাটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে বিএসইসি ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ)।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/নভেম্বর ১২, ২০১৮)