দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সরকার নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নোংরাভাবে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ইসি ‘নেপথ্যলোকের বার্তা’য় কাজ করছে।

সোমবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নেপথ্যলোকের বার্তানুযায়ী কাজ করছে বলেই ঝাঁকে ঝাঁকে ক্ষমতাসীনদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় চোখ বন্ধ করে রাখে। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ নেই বলেই এখন পর্যন্ত তাদের কোন কাজ তারিফযোগ্য হয়নি।’

‘আইন, আদালত ও প্রশাসনকে সম্পূর্ণরুপে গ্রাস করার পরে কবজার মধ্যে থাকা নির্বাচন কমিশনকে একেবারে গিলে ফেলেছে সরকার। এখন নোংরাভাবে ইসিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আত্মা বিক্রির শর্তেই কতিপয় নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে’, বলেন বিএনপির এই নেতা।

‘বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে মামলা ও গ্রেপ্তার পাহাড়ি ঢলের মতো ধেয়ে চলেছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পুলিশ প্রিজাইডিং অফিসারদের নাম চাওয়া, বিএনপির কোনো লোক নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছে কি না ইত্যাদি তদারকি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সারা দেশে নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ তালিকা তৈরি করছে।’

রিজভী বলেন, ‘স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যে কারা কারা সরকার দলের সমর্থক, কারা বিরোধীদলের সমর্থক তাদের তালিকা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকি বিরোধীমতের সমর্থক হলে তাদের নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হচ্ছে বা তাদের হুমকি দিয়ে বলা হচ্ছে আপনারা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন না। গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে মোবাইলেও তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। পুলিশের প্রকাশ্য ও গোপন হুমকিতে এ নিয়ে দেশজুড়ে শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

বিএনপির এই তো বলেন, ‘একজন নির্বাচন কমিশনার আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও প্রশাসনকে ইসির অধীনে নেওয়ার প্রস্তাব করলেও সিইসি ও কতিপয় কমিশনার তা আপত্তি জানান। মূলত সরকারের হুকুম তামিল করতেই ব্যস্ত রয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইসির কর্মকর্তারা ও আওয়ামী নেতারা এখন কথা বলছেন একই সুরে।’

বিটিভিসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনকে চাপ প্রয়োগ করে আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘বিটিভি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান হলেও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরও আওয়ামী লীগের পক্ষে একচেটিয়া প্রচারণা চালানো হচ্ছে। গতকাল একটি বেসরকারি টেলিভিশনে নির্বাচনী জনমত জরিপের নামে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে কৃত্রিমভাবে জনমত বেশি দেখিয়ে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। যা সুস্পষ্ট আচরণ বিধি লঙ্ঘনই নয়, ক্ষমতাসীনদের পক্ষে নগ্ন দালালির নামান্তর মাত্র।’

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/নভেম্বর ১৯, ২০১৮)