দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরে যাওয়ার উপযোগী পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব অবশ্যই মিয়ানমারের। এমন মন্তব্য করে এ সংশ্লিষ্ট সব শর্তপূরণ ও কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে দেশটির প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

শুক্রবার সংস্থাটির এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার আশ্রয়, তাদের অধিকার নিশ্চিত করা, স্বেচ্ছায় ও মযার্দার সঙ্গে রাখাইনে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের অব্যাহত চেষ্টা গভীর প্রশংসার দাবি রাখে। ইউএনএইচসিআর এসব বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর থেকেই তাদের স্বেচ্ছায় ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে মিয়ানমার ও আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশ কাজ করে চলেছে। তবে মিয়ানমারকে অবশ্যই দেশের ভেতর এমন নিরাপদ নিশ্চিত করতে হবে যেন রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ও নির্ভয়ে ফিরতে রাজি হয়। রাখাইনে ফিরে তারা যাতে চলাচলের স্বাধীনতা, বিভিন্ন সেবা ও নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি জীবন নির্বাহে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় সে জন্য বাস্তবে উদ্যোগ গ্রহণ করে দেখাতে হবে মিয়ানমার সরকারকে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমসের এক সম্পাদকীয়তে গত বৃহস্পতিবার বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার যে নির্যাতন চালিয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। চীনের চাপে গত সপ্তাহে দেশটি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে আগ্রহী হলেও বাংলাদেশ তাতে শেষপর্যন্ত সাড়া না দিয়ে সঠিক কাজ করেছে। রাখাইনে এখনও রোহিঙ্গাদের প্রতি চরম বৈষম্য ও নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে।

সংকট শুরুর পর গত বছর অক্টোবরে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ নভেম্বরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়। দিন-তারিখ ঠিক হলেও রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি হননি।

তাদের প্রধান অভিযোগ, মিয়ানমারে তাদের নিরাপত্তার তীব্র অভাব রয়েছে। আপত্তির মুখে জাতিসংঘও তখন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমার এখনও নিরাপদ নয়। তাদের এখনই ফেরত পাঠানো উচিত হবে না। পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে নির্ধারিত দিনে আর ফেরত পাঠায়নি। আপাতভাবে স্থগিত হয়ে যায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া।


(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/নভেম্বর ২৩,২০১৮)