৪টি কোম্পানির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধিতে তদন্ত কমিটি গঠন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চার কোম্পানির অস্বাভাবিকভাবে শেয়ার দর বৃদ্ধি হয়েছে। বৃদ্ধির কারণ জানতে গঠিত দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটিকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক লিমিটেড (আইএসএন), স্টাইলক্রাফট লিমিটেড, ফাইন ফুডস লিমিটেড ও নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের অস্বাভাবিক শেয়ারদর বৃদ্ধি তদন্তে কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেন, চার কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। তাছাড়া কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে সন্দেহজনক লেনদেনের বিষয়টি কমিশনের নজরে এসেছে। তাই চার কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিএসইসির উপপরিচালক মোহাম্মদ শামসুর রহমান ও মো. নানু ভূইয়াকে নিয়ে গঠিত দুই সদস্যের এ কমিটিকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আইএসএন : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানির ১৭ সেপ্টেম্বর শেয়ারদর ছিল ১৯ টাকা ৪০ পয়সা। এর পর থেকেই কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়তে থাকে এবং ৫ নভেম্বর ৪৩ টাকায় দাঁড়ায়।
তবে এরপর শেয়ারটির দর কমতে শুরু করে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ৩৪ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এর আগে গত আগস্টে ডিএসইর পর্ষদ পাঁচ বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ না দেয়ার কারণে আইএসএনসহ ১৫ কোম্পানির ‘পারফরম্যান্স পর্যালোচনা’র সিদ্ধান্ত নেয়।
সে সময় কোম্পানিগুলোর সার্বিক ব্যবসায়িক অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল ডিএসই। জবাব সন্তোষজনক না হলে আইনানুসারে তালিকাচ্যুতির উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও জানিয়েছিল ডিএসই।
স্টাইলক্রাফট: বস্ত্র খাতের কোম্পানিটির শেয়ার দর বছরের পুরোটা সময়জুড়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ছিল। এর মধ্যে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে এর শেয়ারদর ছিল ১ হাজার ৩৬৩ টাকা ৩০ পয়সা। এ বছরের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত শেয়ারটির দর বেড়ে ৪ হাজার ৪৯৮ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়ায়। এরপর দর কমতে শুরু করে এবং ১ নভেম্বর পর্যন্ত ৩ হাজার ৩০৬ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়ায়।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোম্পানিটির পর্ষদ ৪১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করে এবং রেকর্ড ছিল ৪ নভেম্বর। রেকর্ড ডেটের কারণে কোম্পানিটির শেয়ারদর সমন্বয় হয়ে ৫ নভেম্বর ৬৯৭ টাকায় দাঁড়ায়। তবে এর পর থেকেই আবারো স্টাইলক্রাফটের শেয়ারদর বাড়তে থাকে, যা ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৩৫৪ টাকা ৩০ পয়সায় দাঁড়ায়।
ফাইন ফুডস : কোম্পানির শেয়ারদর এ বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ছিল ২৬ টাকা ৪০ পয়সা, যা ১১ নভেম্বর পর্যন্ত বেড়ে ৪৫ টাকা ৭০ পয়সায় দাঁড়ায়। তবে এর পর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমতে শুরু করে এবং সর্বশেষ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৮ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়।
নর্দান জুট: এ বছরের পুরোটা জুড়েই আলোচনায় ছিল নর্দান জুটের শেয়ার। জানুয়ারির শুরু থেকে এর শেয়ারদর ছিল নিম্নমুখী। ডিএসইতে ১ জানুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৫২৯ টাকা ৫০ পয়সা।
মার্চের শেষের দিকে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (আইডিবি) কাছে থাকা নর্দান জুটের ৩০ শতাংশ বা ৬ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ শেয়ার সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান অ্যালায়েন্স ক্যাপিটাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তাব অনুমোদন করে বিএসইসি।
এরপর এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠানটি নর্দান জুটের শেয়ার বাজারে বিক্রি করে দেয়। সে সময় ১২ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৪৪৫ টাকা।
আগের বছরের একই সময়ে লোকসানে থাকলেও চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৩ পয়সা মুনাফা হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/নভেম্বর ২৪,২০১৮)