ঢাবি ‘খ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস!
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষ (সম্মান) ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. এ এম আমজাদ আলী প্রশ্নপত্র ফাঁসের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
এম আমজাদ আলী দিরিপোর্ট২৪কে বলেন, ‘ডিবিকে প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে তারা চক্রটিকে আটক করতে সক্ষম হবে।’
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, তাদের কাছে প্রশ্ন ফাঁসের এমন অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানায় ডিবি।
শুক্রবার পরীক্ষা শেষে প্রশ্ন ফাঁসের এ অভিযোগ পাওয়া যায়। মোবাইলে ক্ষুদেবার্তা, ব্লুটুথ ও বিভিন্ন অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে চক্রটি প্রশ্ন ফাঁস করেছে বলে জানা গেছে।
প্রক্টর দিরিপোর্ট২৪কে জানায়, সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর পরই বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ থেকে একটি মোবাইল জব্দ করা হয় এবং মোবাইলে বিভিন্ন ম্যাসেজ আসতে থাকলে সেটি দেখে প্রশ্ন ফাঁসের সত্যতা যাচাই করা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকা কলেজ কেন্দ্রের এক পরীক্ষকের মাধ্যমে ছাত্রলীগের একটি সিন্ডিকেট ২৯ পরীক্ষার্থীর কাছে থাকা ব্লুটুথে উত্তরপত্র সরবরাহ করেছে বলে প্রমাণ মিলেছে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রথম কয়েক মিনিটের মধ্যেই এই কেন্দ্রে প্রশ্ন ফাঁসের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
ঢাকা কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্র জানায়, পরীক্ষা শুরুর ৫ মিনিট পর ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়েজের (দক্ষিণ ছাত্রাবাস) নেতৃত্বে দক্ষিণায়ন হলের কাওছার (ব্যবস্থাপনা, চতুর্থ বর্ষ) ও মামুন (ব্যবস্থাপনা চতুর্থ বর্ষ) চুক্তিবদ্ধ এক পরীক্ষকের কাছ থেকে প্রশ্ন নিয়ে আসে। যা দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাসের ২০৫ নম্বর কক্ষে বসে সমাধান করা হয়। সেখান থেকেই ব্লুটুথের মাধ্যমে পরীক্ষার হলে থাকা শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠানো হয়।
ঘটনায় ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এফ এইচ পল্লব টাকার বিনিময়ে তাদের সহায়তা করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করা শুভর নেতৃত্বে একটি চক্র জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি পরীক্ষার আগের দিন রাত তিনটার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশি মোড়ে এ চক্রের সঙ্গে ভর্তিচ্ছু চার শিক্ষার্থী মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চুক্তি করে।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করতে দীর্ঘদিন ধরেই কয়েকটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে এর আগেও বিসিএস, এসএসসি, এইচএসসি ও প্রাথমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. এ এম আমজাদ আলী বলেন, ‘ঢাকা কলেজে এরূপ অভিযোগ পাওয়ায় সেখানে আমাদের টিম পাঠানো হয়েছে। এ চক্র আগেও সক্রিয় ছিল। এখনও সক্রিয় রয়েছে।’
তবে ঢাকা কলেজ কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
(দিরিপোর্ট২৪/জেএস/এমসি/জেএম/নভেম্বর ০৯, ২০১৩)