মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: জেলার সিঙ্গাইর উপজেলায় এক কিশোরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছয় টুকরা করে হত্যা ও লাশ গুমের ঘটনায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সেইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ শহীদুল আলম ঝিনুক এই আদেশ দেন।

এসময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজন আসামির মধ্যে তিনজন ও যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত তিনজনের মধ্যে দুইজন এবং খালাসপ্রাপ্ত একজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, রাকিবুল, সুলতান, সোহেল ও রফিক।যাবজ্জীবনদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন রুবেল, সজীব ও আকিবুল। এই মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে শরীফুল নামের একজনকে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সুলতান ও সজীব পলাতক রয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মাসে সিঙ্গাইরের ধল্লা ইউনিয়নের খাসেরচর গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে জহিরুল ইসলামকে (১৮) তার বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় বাস্তা গ্রামের সুলতানের বাড়িতে।

সেদিন রাতে আর জহিরুল বাড়ি ফিরেনি। পরে তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন বিষয়টি থানাকে জানালে পুলিশ ওই দিন বিকেলে সুলতানের বাড়িতে অভিযান চালায়।

এসময় তল্লাশি করে ওই বাড়ি থেকে পুলিশ জহিরুলের মোবাইলের দুটি সিমকার্ড, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করে।

নিখোঁজের দুই দিন পর ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে সুলতানের বাড়ি সংলগ্ন প্রবাসী আব্দুল কাইয়ুমের বাড়ির বাথরুমের সেপটি ট্যাংকির ভেতর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় জহিরুলের গলা ও হাত-পা বিচ্ছিন্ন ছয় টুকরা মরদেহ পাওয়া যায়।

পরে নিহতের বাবা শেখ খোকন মিয়া আটজনকে বাদী করে সিঙ্গাইর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলার মূল আসামি সুলতানকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে গেল ২০১৭ সালে চার জুন মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতে মোট ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এপিপি মথুর নাথ সরকার ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/নভেম্বর ২৭, ২০১৮)