দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ট্যুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে এসে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও বছরের পর বছর বছর ধরে বাংলাদেশেই অবস্থান করছেন। আর নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছেন তারা।

কয়েকজন আফ্রিকানকে আটকের পর এই তথ্য পেয়েছে র‍্যাব। বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফট্যানেন্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।

এর আগে, বুধবার (২৮ নবেম্বর) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে বসবাসরত আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের ১৪ জন নাগরিককে আটক করে র‍্যাব-১। দীর্ঘদিন ধরে তারা প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলো।

আটকের সময় তাদের কাছ থেকে ২৯টি মোবাইল সেট, ২টি ল্যাপটপ, নগদ ১ লাখ ৫৮৫ টাকা, ১ হাজার ১৩ ডলার ও বিভিন্ন ব্যাংকের কয়েকটি চেক উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব-১ এর সিও সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, আফ্রিকান এই নাগরিকরা মূলত ফুটবল খেলা ও বিভিন্ন ব্যবসার নামে ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তারা এখানে অবস্থান করছিলেন।

আটকদের মধ্যে নাইজেরিয়ার ৭ জন, উগান্ডার ২ জন, ক্যামেরুনের ১ জন, কঙ্গোর ১ জন, লাইবেরিয়ার ১ জন, তানজানিয়ার ১ জন এবং মোজাম্বিকের ১ জন নাগরিক রয়েছেন।

তিনি বলেন, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া আইডি খোলে এরা। তারা নিজেদের আফগানিস্তানে যুদ্ধরত সৈনিক বা জাতিসংঘের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে এদেশের অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। একপর্যায়ে বন্ধুর জন্য দামী উপহার পাঠাবে বলে জানায়।

কয়েকদিন পর এ চক্রেরই বাংলাদেশি সদস্যরা ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে ফোন দিয়ে কাস্টমস বা ডাক বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে কথা বলে। ট্যাক্স ফি বা অবৈধ জিনিসের কথা বলে উপহার ছাড়ানোর জন্য বলে। এক পর্যায়ে তাদের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেয় বিপুল পরিমাণ অর্থ।

উদ্ধারকৃত বিভিন্ন ব্যাংকের চেকের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলেই তাদের প্রতারণার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বেরিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, সাদা কাগজে রাসায়নিক মিশিয়ে ডলার তৈরির প্রলোভন দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকেও বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।

এ চক্রটি প্রতিমাসে ৩০-৩৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে কয়েকজন বাংলাদেশিরা সহায়তা করেন। সেসব বাংলাদেশিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

এই চক্রের মূল হোতা হিসেবে মার্ক নামে নাইজেরীয় এক নাগরিককে শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে এখনও আটক করা সম্ভব হয়নি। আমরা খবর পেয়েছি সে দেশ ছেড়েছে। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বের করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/নভেম্বর ২৯, ২০১৮)