সিলেট প্রতিনিধি : সিলেট নগরীতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার পারিবারিক বাসভবনে গেলেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ইনাম আহমদ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি নগরীর ধোপাদীঘির পাড়ে অর্থমন্ত্রীর বাসভবনে যান।

ইনাম আহমদ এবার মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ (সদর-নগর) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এ আসনের বর্তমান এমপি আবুল মাল আবদুল মুহিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। অর্থমন্ত্রীর বদলে এবারে তার ছোট ভাই ড. এ কে আবদুল মোমেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে, এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরও বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন। আগামী ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে তাদের একজন সরে দাঁড়াবেন বলে দলীয় সূত্র জানায়।

এদিন সকালে ইনাম আহমদ নগরীর মুহিতদের 'হাফিজ কমপ্লেক্সে' গেলে তাকে মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। এ সময় অর্থমন্ত্রী ও ড. আবদুল মোমেন ছাড়াও তাদের আরেক ভাই সাবেক সচিব ড. এ কে আবদুল মুবিনসহ ঘনিষ্ঠজনরা উপস্থিত ছিলেন। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সিলেটের রাজনৈতিক ঐতিহ্য নিয়ে ইনাম আহমদ আলোচনা করেন বলে সূত্র জানায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান ও সিলেটের রাজনৈতিক সম্প্রীতি রক্ষায় একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। ইনাম আহমদ শুভেচ্ছা বিনিময়ে এসেছিলেন বলে জানান অর্থমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী জাবেদ সিরাজ। তিনি জানান, উনি প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো ছিলেন। ইনাম আহমদ সিলেট-১ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন বলে জানালে অর্থমন্ত্রী তাকে স্বাগত জানান।

অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ইনাম আহমদের সাক্ষাৎকারের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে অনেকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তবে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থানের সমালোচনা করে কেউ কেউ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। মহানগর বিএনপির এক নেতা ইনাম আহমদের সঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াসহ নির্বাচনী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়াকে নিজের 'ভুল সিদ্ধান্ত' মন্তব্য করে এ জন্য 'অনুতপ্ত' বলে জানান।

তবে ইনাম আহমদের রাজনৈতিক সচিব রোশেল রহমান বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধে তার নেতা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন। তিনি সমকালকে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের এখনও গ্রেফতার করা হচ্ছে, বাসাবাড়িতে গিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী এবার নির্বাচন করছেন না।

তিনি সিলেটের অভিভাবকও। তাই ইনাম আহমদ বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-হয়রানির বিষয়টি অর্থমন্ত্রীকে জানাতেই তার বাসায় গিয়েছিলেন। বুধবার রাতেও বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এতে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হচ্ছে।

জানা গেছে, ইনাম আহমদ চাকরিজীবনে অর্থমন্ত্রীর জুনিয়র সহকর্মী ছিলেন। অন্যদিকে, ইনাম আহমদের জুনিয়র ছিলেন ড. মোমেন।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/নভেম্বর ২৯,২০১৮)