দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শনিাবর সংবাদ সম্মেলন করবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন। সম্মেলনে  তিনি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেও ‘গায়েবি মামলায়’ বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের কথা তুলে ধরবেন বলে জোটের মুখপাত্র জানিয়েছেন।

শুক্রবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জোটের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হওয়ার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের এটিই ছিল প্রথম বৈঠক।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, শনিবারই ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন। আমরা আশা করছি, বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে।

গত ৮ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই নির্বাচনে গণতান্ত্রিক নেতা-কর্মীরা যাতে মাঠে থাকতে না পারে, এই নির্বাচনে তারা যেন অংশগ্রহণ করতে না পারে সেজন্য সেই পুরনো কায়দায় মিথ্যা মামলায় তাদের আসামি করা হচ্ছে। তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করছে, গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

যারা প্রার্থী তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নির্বাচনের যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তার ন্যূনতম অবস্থা এখন নেই।”

এই অবস্থার পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “অবিলম্বে গ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে, ঘরে ঘরে তল্লাশি বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে অবিলম্বে তাদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

অন্যথায় যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে তার জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশন দায়ী থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, “জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে কোনো অবস্থাতে নির্বাচনে থাকবে এবং যে কোনো অবস্থায় জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবেই আন্দোলন করবে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার গণফোরামের সংবাদ সম্মেলনে দলটির সভাপতি কামাল হোসেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার গণফোরামের সংবাদ সম্মেলনে দলটির সভাপতি কামাল হোসেন।
ফ্রন্টের শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসন বণ্টনের হিসাব পাবেন ২ ডিসেম্বরের পরে। অর্থাৎ বাছাই হয়ে গেলে আমরা আপনাদের চূড়ান্ত হিসাব জানতে পারবেন।”

তাদের নির্বাচনী ইশতেহার কবে আসছে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার প্রণয়নের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই আপনারা ইশতেহারও দেখতে পারবেন।”

বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেনকে নিয়ে ‘কটূক্তি’র নিন্দা জানানো হয়। একইসঙ্গে কারাবন্দি ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের জামিন না হওয়ারও নিন্দা জানানো হয়।

বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে মির্জা ফখরুল ছাড়াও বিএনপির মওদুদ আহমদ, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মনটু, সুব্রত চৌধুরী, কৃষক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী, হাবিবুর রহমান তালুকদার, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, শহীদুল্লাহ কায়সার, মোমিনুল ইসলাম, জাহেদ উর রহমান, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মো. মনসুর এবং গণস্বাস্থ্য সংস্থার ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/নভেম্বর ৩০,২০১৮)