ভিকারুননিসার ৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে র্যাব-পুলিশের কাছে চিঠি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার বিকেলে র্যাবের মহাপরিচালক ও ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনারকে চিঠি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনাগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
এই তিনি জন হলেন স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জীনাত আরা ও শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনা।
এই ঘটনায় গঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিয়েছে। দুপুরে এই প্রতিবেদনের সারাংশ তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, শাখা প্রধান জিনাত আখতার এবং অরিত্রীর শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনার অশোভন আচরণ, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং অরিত্রীর বাবা-মার সঙ্গে অধ্যক্ষ ও শাখা প্রধানের নির্মম, নির্দয় আচরণ অরিত্রীকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে এবং তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে।
এ জন্য কমিটি এই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে।
অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় এই তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করার জন্য স্কুলটির ব্যবস্থাপনা কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে তাদের এমপিও বাতিলেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত সোমবার শান্তিনগরের বাসা থেকে অরিত্রীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বিক্ষোভ করছেন।
সেদিন কী ঘটেছিলো ?
৩ ডিসেম্বর বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালে নকল করার অভিযোগে শিক্ষকদের দ্বারা অপমানিত হওয়ার পর সেদিনই ভিকারুননিসা নূন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারী বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করে।
সেই ছাত্রীর বাবা জানান, তাদেরকে স্কুলে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। তাদেরকে বলা হয়, পরীক্ষার সময় তাদের মেয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল।
তিনি আরও বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়েটিকে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে দিবে বলে জানায়। এমনকি, তাকে টিসি দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শান্তিনগরের বাসায় ফিরে মেয়েটি তার ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর, গলায় স্কার্ফ পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে।
পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে বিকেল ৪টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ডিসেম্বর ০৫,২০১৮)