দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ইউরোপীয় ইউনিয়ন পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক মিশন না পাঠালেও একাদশ জাতীয় নির্বাচন গুরুত্ব সহকারেই পর্যবেক্ষণ করবে। এ কাজে এবার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন ঢাকায় কর্মরত ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশনপ্রধানরা। নির্বাচনে কমনওয়েলথ এবং ভারত থেকে পর্যবেক্ষক আসার বিষয়টিও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয় হয়নি বলে  সূত্র থেকে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ইইউ এবার পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক মিশন পাঠাচ্ছে না। এর অর্থ এই নয় যে সংস্থাটি নির্বাচনী প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের বাইরে থাকছে। দু'জন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিশেষজ্ঞ এ মুহূর্তে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি তারা লক্ষ্য রাখছেন। এর বাইরে ইইউভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত এবং মিশনপ্রধানরা এবার নির্বাচন পর্যবেক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন। নির্বাচনের দিনেও তারা বিভিন্ন স্থানে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যাবেন। নির্বাচনের পর প্রতিটি মিশন থেকেই পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন যাবে। একাধিক স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ফলে ইইউ আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণাঙ্গ মিশন না পাঠালেও ব্যাপকভিত্তিতেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

অপর একটি পশ্চিমা সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং গণমাধ্যমকর্মীরা কতটা স্বাধীনভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় এখনও কাটেনি। এর আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে গণমাধ্যমকর্মীরা হামলার শিকার হয়েছেন এবং পর্যবেক্ষকরাও বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন। সেই অভিজ্ঞতা এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষকদের দায়িত্ব পালন নিয়ে নানা ধরনের বক্তব্যের কারণেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিষয়ে সংশয় কাটছে না। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সুনির্দিষ্ট একটা বক্তব্য আসা উচিত বলে তারা মনে করেন।

সূত্র জানায়, সরকারি ও বিরোধী উভয় রাজনৈতিক জোট থেকেই ইইউ, যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রভাবশালী পশ্চিমা দেশের মিশনগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে দুই জোট থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে ওঠা অভিযোগগুলো মিশনগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষণ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার গত সোমবার পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাতে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের এবারের জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ২০টি দল পাঠাবে। এর আগে তিনি রয়টার্সকে ১২টি পর্যবেক্ষক দল আসার কথা জানিয়েছিলেন। রবার্ট মিলার বিশ্বাসযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারেও প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।

আর একটি সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত কমনওলেথ পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তবে কমনওয়েলথ থেকে ছোট আকারের হলেও একটি পর্যবেক্ষক দল আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া ভারতও এখন পর্যন্ত পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত না করলেও ভারত থেকেও পর্যবেক্ষক দল আসবে।

সূত্র আরও জানায়, ব্যাংককভিত্তিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা 'এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন (এনফ্রেল)'-এর পক্ষ থেকে একটি পর্যবেক্ষক দল আসবে। এশিয়ার দেশগুলোতে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিশ্বব্যাপী পরিচিত সংস্থাটি। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সদস্য সংস্থার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে এই সংস্থা। বাংলাদেশে 'অধিকার' এবং 'ফেমা' এনফ্রেলের সদস্য।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ডিসেম্বর ০৫,২০১৮)