আজরাঈলের সাথে সংলাপ, বুদ্ধিজীবীদের পেট কিংবা গণিকার যৌনাঙ্গ ও অন্যান্য কবিতা
মঈন মুনতাসীর
ফিরে এসো সুবর্ণরেখা
ফিরে এসো এই বাগদী জীবনে শোষকের রাঙা চোখে
শোকে বিহ্বল এ এক বিরান জনপদ
শ্বাপদ ঢুকেছে ঘরে, শুধু পচন গন্ধ আসে
পাশে প্রিয়তম নেই কেউ-কে ভাঙবে অত্যাচারীর হাত
রাত কাটে নির্ঘুম, কখন দরজায় কড়া নাড়ে
ঘাড়ে ধরে স্টেনগান বলবে- ব্যাটা ছুট...!
বুটজুতা পায়ে আমাকে থেতলে দেবে আর
জামার ভেতর হাত দিয়ে টেনে নেবে বোনের সম্ভ্রম
আশ্রম যেনো এদেশ আজ শুধু মরা মানুষের
̶ ঘাতক প্রিয় এ সিংহাসন
বাঙালি হারিয়েছে পথ চিরচেনা সাহসের
̶ খুলে ফেলেছে সেই যুদ্ধ বসন
ফিরে এসো সুবর্ণরেখা, ধুয়ে দাও পাপিষ্ঠ সময়
ধুয়ে দাও হৃদয়ে জমে থাকা বরফ সমান ভয়!
মাতাল মাঝি, সঙ-খোয়াব এবং ও ওৎ-পাতা হাঙর
ঝড়ের কবলে পড়েছে আমাদের নৌকা
প্রবল বাতাস হেঁচকা টান দিয়ে তুলে এনেছে নোঙর
চারপাশে ওৎ-পেতেছে হাঙর, আর সামুদ্রিক দাঁতাল
আমাদের মাতাল মাঝি তখনো হুঁকোয় দিচ্ছে ফুঁ
কেউ রুকু কেউ সিজদায় কেউ ভগবান নাম জপে
কেউ ঈশ্বর পানে নিজেরে সপে মসীহের নামে বিহ্বল
এখন দল-বে-দল, ধর্ম- বর্ণ নেই আর ভেদাভেদ
যার নেই মেদ, মোটা যে জন- গলাগলি রহিম আর যদু
যেনো জাদু দেখার পর শিউরে উঠেছি
নিরন্তর ছুটেছি এক অনিবার্য পতনের দিকে
গরম শিকে নিজেদের মাংস বিঁধে হয়েছি শিক-কাবাব
মাতাল মাঝি, এবার তোমার ভাঙো সাধের সঙ-খোয়াব
আজরাঈলের সাথে সংলাপ, বুদ্ধিজীবীদের পেট কিংবা গণিকার যৌনাঙ্গ
আমি হয়তো মরে যাবো অকালে।
আজ সকালে-শহরের গণিকারা এসেছিলো আমার দরজায়!
আমি তখন মৃত্যুশয্যায়, ব্যস্ত আজরাঈলের সাথে সংলাপে,
সংক্ষুব্ধ প্রতিবাদের শাপে- আমার আটকে দিলো মুখ-
আমি বোঝাতে পারিনি তারে- কবি ঠিক গণিকার অসুখ!
সকল তত্ত্বকথার বেশ কিছু সময় আগে-
দেহ কিংবা আত্মার সংযোগে গণিকারা মুগ্ধ করে বটে,
আজও জন্মভূমির জিভ চেটে-পুটে জীবিকা বানিয়েছে যেসব বুদ্ধিজীবী-
আমি একুশ শতকের কবি অভিশাপ দিচ্ছি ছুঁড়ে,
গণিকার যৌনাঙ্গের মতো বুদ্ধিজীবীদের পেট যাক সংঘাতে পুড়ে!
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ডিসেম্বর ০৭,২০১৮)