সূচক ইতিবাচক, ডিএসইতে লেনদেন কমলেও
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়। লেনদেন কমলেও বাজার ইতিবাচক অবস্থানে ছিল। দৈনিক গড় লেনদেন চার দশমিক ৭৭ শতাংশ কমেছে। সে সঙ্গে কমেছে মোট লেনদেনও। আগের সপ্তাহেও পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। লেনদেন কমলেও সবগুলো সূচক ইতিবাচক অবস্থানে ছিল। বাজার মূলধন বেড়েছে দশমিক ৪৮ শতাংশ। বেড়েছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার দিন সূচকের উত্থান হয় এবং একদিন পতন হয়। সূচক ও লেনদেনে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫১ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৮ শতাংশ বেড়ে পাঁচ হাজার ৩৩২ দশমিক ৮১ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ বেড়ে এক হাজার ২২৪ দশমিক ২০ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএস৩০ সূচক দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৮৬২ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৪৯টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২২৪টির, কমেছে ১০০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২২ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি তিনটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৬০০ কোটি ৭০ লাখ ৬১ হাজার টাকার। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৬৩০ কোটি ৭৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৩০ কোটি সাত লাখ টাকা বা চার দশমিক ৭৭ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় তিন হাজার তিন কোটি ৫৩ লাখ ছয় হাজার ৭৮১ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল তিন হাজার ১৫৩ কোটি ৮৮ লাখ ৭১ হাজার ৬৬২ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে ১৫০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বা চার দশমিক ৭৭ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৮১ হাজার ৭৮২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৮৩ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে দশমিক ৪৮ শতাংশ বা এক হাজার ৮৪২ কোটি টাকা।
গেল সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে সোনালী আঁশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর ৪৮ দশমিক ৯০ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা আরএন স্পিনিংয়ের দর ২৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের দর ২৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়েছে। ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের দর ২০ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং জাহিন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের দর ১৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ডের দর ১৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৬ দশমিক ৫১ শতাংশ, এম্বি ফার্মার ১৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ, প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৬ দশমিক শূন্য এক শতাংশ ও এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের দর ১৫ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ১৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ কমে সাপ্তাহিক দরপতনের শীর্ষে অবস্থান করে এমএল ডায়িং। মুন্নু জুট স্টাফলার্সের দর ১৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ, সেন্ট্রাল ফার্মার ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ, প্রাইম টেক্সটাইলের ৯ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ, ফারইস্ট নিটিংয়ের আট দশমিক ৯৯ শতাংশ, কুইন সাউথের আট দশমিক ৮১ শতাংশ, আইটি কনসালট্যান্টসের আট দশমিক ১০ শতাংশ, ন্যাশনাল টিউবসের সাত দশমিক ৭৫ শতাংশ, ভ্যানগার্ড এএমএল বিডির সাত দশমিক ৫০ শতাংশ ও এসকে ট্রিমসের দর সাত দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো: সায়হাম কটন, ড্রাগন সোয়েটার, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, এমএল ডায়িং, খুলনা পাওয়ার, ইন্দো-বাংলা ফার্মা, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড ও এসকে ট্রিমস।
অন্যদিকে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৮৯ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮২টির, কমেছে ৮৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৮টির দর।
সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স বেড়েছে দশমিক ৬৯ শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক বেড়েছে দশমিক ৮৮ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক দশমিক ৪১ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক দশমিক ১০ শতাংশ বেড়েছে। সিএসই৩০ সূচক কমেছে দশমিক ৫২ শতাংশ।
সিএসইতে গত সপ্তাহে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩৭ কোটি শূন্য সাত লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৫৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। লেনদেন বেড়েছে ১৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
৪৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়ে সিএসইতে সাপ্তাহিক টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে ‘জেড’ ক্যাটেগরির অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। এর পরের অবস্থানগুলোয় ছিল খুলনা প্রিন্টিং, তুংহাই নিটিং, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, আরএন স্পিনিং, ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, তাল্লু স্পিনিং, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ঢাকা ডায়িং ও বঙ্গজ লিমিটেড।
অন্যদিকে টপ টেন লুজার তালিকায় উঠে আসে এমএল ডায়িং, সেন্ট্রাল ফার্মা, এসকে ট্রিমস, সিএপিএম বিডিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান, মতিন স্পিনিং, প্রাইম টেক্সটাইল, আইটি কনসালট্যান্টস, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, এ্যাপেক্স ফুডস ও আমরা টেকনোলজিস। সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল এমএল ডায়িং, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, খুলনা পাওয়ার, ওয়েস্টার্ন মেরিন, কাট্টলী টেক্সটাইল, সায়হাম কটন, ফাস ফাইন্যান্স, ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ ও লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ডিসেম্বর ০৯,২০১৮)