দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় ব্যাংক খাতের আমানত ও বিনিয়োগের এক-চতুর্থাংশ সরবরাহ করছে ইসলামী ধারার ৮ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী মোট আমানত, ঋণ বিতরণ ও রেমিট্যান্স সংগ্রহে উন্নতীর দিকে রয়েছে ব্যাংকগুলো।

গত সেপ্টেম্বর শেষে পুরো ব্যাংকিং খাতে মোট আমানত ছিল ৮ লাখ ৯৫ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আমানত দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার ৭ কোটি টাকা, যা মোট আমানতের ২৩.৩১ শতাংশ। গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে এ হার ছিল ২২.৭৯ শতাংশ।

দেশে ৮টি ব্যাংক পুরোপুরি ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে। আর প্রচলিত ধারার দেশি-বিদেশি ৯টি ব্যাংক রয়েছে যাদের ইসলামী ব্যাংকিং শাখা রয়েছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি ৮টি ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো রয়েছে। পুরোপুরি ইসলামী ব্যাংকিং করা ৮ ব্যাংকের ১ হাজার ১৫৬টি শাখা ও অন্যান্য ব্যাংকের ৪৪টিসহ মোট ১ হাজার ২০০ শাখার মাধ্যমে দেশব্যাপী ইসলামী ব্যাংকিং হচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকিংয়ে ঋণকে বিনিয়োগ বলা হয়ে থাকে।

গত সেপ্টেম্বরের বিনিয়োগ তথ্য বিশ্নেষণ করে দেখা গেছে, এসব ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ৩৪.৫৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে ব্যবসা-বাণিজ্য খাতে। এরপরই রয়েছে শিল্প ঋণ। এখাতে ব্যয় করা হয়েছে ২৭.৪১ শতাংশ। আর ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে বিতরণ করেছে ২১.৪৪ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ২৮.৫৫ শতাংশ। এছাড়া আবাসন খাতেও বিনিয়োগ কমেছে আগের তুলনায়। সর্বশেষ তথ্য মতে, আবাসন খাতে ইসলামী ব্যাংকগুলো ৫.৭৪ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে।

এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স সংগ্রহে ইসলামী ব্যাংকগুলোর বড় অগ্রগতি হয়েছে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্সের ৩৬.১৪ ভাগ এসেছে ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে। যা গত সেপ্টেম্বর শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮.০৩ শতাংশে। এবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে ৩২ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে ১২ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা এসেছে ইসলামী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে।

উল্লেখিত খাতে উন্নতী হলেও সম্প্রতি এই ধারার ব্যাংকগুলোতে টান পড়েছে অতিরিক্ত তারল্যে (এক্সেস লিকুইডিটি)। চলতি মাসের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ইসলামী ধারার ৮টি ব্যাংকের অতিরিক্ত তারল্য কমেছে ১৯.৫৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, (এপ্রিল-জুন) সময়ের চেয়ে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত তারল্য কমেছে ১ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। এসময়ে অতিরিক্ত তারল্য কমে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২০২ কোটি টাকায়।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ডিসেম্বর ১৬,২০১৮)