দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক :  দেশের পরিচালিত বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা ফোরজি প্রযুক্তি চালু করার প্রায় ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টেলিটক। ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগরীর পুরো এলাকায় সেবাটি চালু করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত রাজধানীর মাত্র ১২ পয়েন্টে ফোরজি সেবা চালু করতে পেরেছে টেলিটক। আর চট্টগ্রাম নগরীতে এখনও চালু করার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যদিও পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার সময়ও এর চেয়ে বেশি পয়েন্টে সেবাটি চালু করা হয়েছিল।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি বছরের মে ও আগস্ট মাসে দুই দফা ফোরজি সেবা চালু করার উদ্যোগ নিলেও তাতে সফল হয়নি টেলিটক। শেষ পর্যন্ত ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা ও চট্টগ্রামে একই সঙ্গে চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা ফোরজি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিলেও শুরুতেই ব্যর্থ হয় প্রতিষ্ঠানটি।

জানতে চাইলে টেলিটকের প্রকল্প পরিচালক তারকিবুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমানে রাজধানীর ১২টি পয়েন্টে টেলিটক ফোরজি সেবা চালু করেছে। পর্যায়ক্রমে রাজধানীর সব পয়েন্টে এটি চালু করা হবে। চট্টগ্রামে সেবাটি পৌঁছাতে আরও দুই থেকে তিন সপ্তাহের মতো লাগবে। আর সারা দেশে সেবাটি পৌঁছাতে মোটামুটি তিন মাসের মতো লাগবে। অর্থাৎ মার্চ নাগাদ সেবাটি সারা দেশে পৌঁছাবে বলে জানান তিনি।

তথ্যমতে, রাজধানীর গুলশান, নিকেতন, বারিধারা, বনানী, রমনা, মতিঝিল, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, শ্যামলী, ফার্মগেট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট এলাকায় টেলিটকের ফোরজি নেটওয়ার্ক পাবেন গ্রাহকরা। এছাড়া টেলিটকের থ্রিজি সংযোগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফোরজি সেবাতে কনভার্ট হয়ে যাবে। এ জন্য আলাদা করে নতুন সিম নিতে হবে না। তবে মাইগ্রেট করার জন্য বর্তমান থ্রিজি গ্রাহকদের ‘৪জি’ লিখে ‘১১১’ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
টেলিটক কর্মকর্তাদের দাবি, এই নেটওয়ার্কেই গ্রাহকরা পাবেন সেরা গতির ইন্টারনেট। টেলিটক ফোরজির ডাউনলোড স্পিড থাকবে ৪০ এমবিপিএস ও আপলোড স্পিড থাকবে ১৫ এমবিপিএস।

যদিও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ফোরজির গতি ন্যূনতম সাত এমবিপিএস নির্ধারণ করেছে। তবে টেলিটক নির্ধারিত গতির চেয়েও নিয়মিত বেশি দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে লাইসেন্স পেয়ে ফোরজি প্রযুক্তি চালু করে দেশের বেসরকারি তিন মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক। তবে এর আগে থ্রিজির সময় সব অপারেটরকে একই দিনে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল।

যদিও টেলিটক বাদে অন্য অপারেটরগুলো এক বছর পর থ্রিজি সেবা চালু করার অনুমতি পায়, তবে টেলিটক তখনও কোনো সুবিধা করতে পারেনি।

সূত্রে জানা গেছে, অপারেটরটি ফোরজি সেবা চালু করার জন্য ৯৮৭ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। এর মধ্যে ৫৫০টি টাওয়ার এরই মধ্যে দেশের প্রধান জেলা শহরগুলোতে স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৫৫০টি টাওয়ার চালুর প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

বিটিআরসির সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য (অক্টোবর, ২০১৮) অনুযায়ী দেশে মোট সক্রিয় মোবাইল ফোন গ্রাহক ১৫ কোটি ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার। এর মধ্যে টেলিটকের বর্তমান সক্রিয় গ্রাহক ৩৪ লাখ ৯৩ হাজার, যা মার্কেট শেয়ারের দুই শতাংশ মাত্র।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ডিসেম্বর ২০,২০১৮)