পশ্চিমা দেশের মোলায়েম প্রতিক্রিয়ায় আশাহত বিরোধীদল
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বাংলাদেশে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠার পর পশ্চিমা রাষ্ট্র থেকে প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে কিন্তু তাতে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। বিভিন্ন অভিযোগে উদ্বেগ ও স্বচ্ছ তদন্তের কথা বলা হলেও সরাসরি সেগুলোকে নিন্দা করা হয়নি। খবর বিবিসির।
বরং যথেষ্ট মোলায়েম ভাষায় বিবৃতি এসেছে।পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে প্রতিক্রিয়া এসেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইয়োরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে।তাদের বিবৃতির ভাষা কিছুটা একই রকম।
দশ বছর পর একটি নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণকে তারা ইতিবাচক বলে মনে করছেন।
নির্বাচনের দিন সহিংসতা, বিরোধীদের প্রচারণা ও বহু ভোটারদের ভোট দিতে বাধা এসব নানা বিষয় তারা খেয়াল করেছেন বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু এসব ব্যাপারে খু্ব সরাসরি শক্ত নিন্দাও জ্ঞাপন করা হয়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের কাছে জিজ্ঞেস করেছিলাম তারা বিষয়টি ঠিক কিভাবে দেখছেন?
তিনি বলছেন, "এটা ঠিক যে আমরা ভেবেছিলাম ওরা আরেকটু কড়াভাবে তাদের প্রতিক্রিয়াটা ব্যক্ত করবেন। কিন্তু হয়ত কূটনৈতিক কারণে সেটা হয়ত করেন নাই। আমাদেরকে একটু অপেক্ষা করতে হবে। দেখতে হবে। কারণ তারা তো ঐ অপশনটা ওপেন রেখেছে।"
"তারা সরকারকে শুভেচ্ছাও জানান নাই অভিনন্দনও জানাননাই। সেখানে একটা ওপেনিং রেখে দিয়েছে তারা।"
নির্বাচনের দিন সন্ধ্যায় বিরোধী জোট থেকে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলা হয়।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়ে স্বচ্ছ তদন্তের কথা বলা হয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে নির্বাচনকে ঘিরে এসব অভিযোগকে দু:খজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নানা অভিযোগ নির্বাচনকে কলুষিত করেছে বলে মন্তব্য করেছে ইয়োরোপীয় ইউনিয়ন।
অনিয়মের অভিযোগের বিষয় সব পক্ষকে একসাথে কাজ করতে বলছে যুক্তরাষ্ট্র।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ চৌধুরীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম তারা বিষয়টি কতটা আমলে নিচ্ছেন?
তিনি বলছেন, "কোন দেশ কিভাবে এটাকে মূল্যায়ন করলো এর চেয়ে বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে বাংলার মানুষ কিভাবে নির্বাচনটাকে নিলো। আমাদের পার্শ্ববর্তী যে দেশগুলো ছিলও তার সকলেই এই বিজয়কে অভিনন্দন জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র পজিটিভ প্রতিক্রিয়া দিয়েছে।"
কিন্তু সরাসরি অভিনন্দন না জানানোর বিষয়ে তিনি বলেন, "সকলেরই একটা পার্টি টু পার্টি রিলেশন থাকে। যেমন দেখেন নির্বাচনের পরের দিনই যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বিএনপি অফিসে গিয়েছিলো। নিশ্চয়ই তাদের মধ্যেও এ ধরনের নির্বাচনের ধারনা ছিলও না। কারণ বাংলাদেশের মানুষকে তারা রিড করতে পারে নি।"
কিন্তু ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে চীন ও ভারতের পক্ষ থেকে খুব দ্রুত এবং সরাসরি নির্বাচনে জয়ের জন্য শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম সেটি কি বার্তা বহন করে?
তিনি বলছেন, "তারা হয়ত এরকমটাই চাইছিল। তারা খুশি হয়েছে বলেই দ্রুত জানিয়েছেন। ইকুয়ালি চীনের এখানে বড় একটা বিনিয়োগ আছে। ভারতের সাথে তাদের একটা প্রতিযোগিতাও আছে। দু দেশের এই বিবৃতি প্রতিযোগিতামূলকও হতে পারে।"
তিনি বলছেন, পশ্চিমা এই দেশগুলোর পক্ষ থেকে সরাসরি কোন শুভেচ্ছাও যে জানানো হয়নি সেটিও এক ধরনের ইংগিত।
তিনি বলছেন, "আমেরিকা ও ইয়োরোপীয় ইউনিয়ন একটা সেফ ডিসট্যান্স মেইনটেইন করেছে। তাদের কনসার্ন জানিয়েছে এবং এর একটা তদন্তের কথাও তারা বলেছে। পশ্চিমা দেশগুলো হয়ত চীন ও ভারতের মতো করে ভাবে নি। তারা একটা রিজার্ভেশন রেখেছে।"
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জানুয়ারি ০২,২০১৯)