নোয়াখালীর সেই নারীর গণধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে
নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী এলাকার সেই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষার পর গণধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ খলিল উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আজ ডা. আকেপা জাহানের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম নির্যাতিতা নারীর শারীরিক পরীক্ষা শেষ করেন। পরে দুপুরের দিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনটি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. খলিল উল্লাহর কাছে জমা দেন। প্রতিবেদনটি তিনি নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেন।
নির্যাতনের শিকার নারীর অভিযোগ, তিনি রবিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে এলাকার একটি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যান। এসময় কেন্দ্রে থাকা আওয়ামী লীগের কয়েকজন যুবক তাকে তাদের পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে বলেন। তিনি তাতে রাজি না হলে যুবকেরা তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। ওই দিন রাত ১২টার দিকে ছালা উদ্দিন, সোহেল, বেচু, মোশারফসহ ১০ থেকে ১২ জনের একদল যুবক ঘরে ঢুকে প্রথমে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে মারধর করেন।পরে স্বামী ও সন্তানদের বেঁধে রেখে ওই নারীকে ঘরের বাইরে পুকুরপাড়ে এনে গণধর্ষণ করেন।
এই নারীর দাবি, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা সবাই একই এলাকার চর জুবলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য রুহুল আমিনের লোক।আসামিরা কে কোথায় আছে—রুহুল আমিন সবই জানেন।
পুলিশ এ ঘটনার ইন্ধনদাতা হিসেবে রুহুল আমিনসহ এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে।
সুবর্ণচরের চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন জানান, বুধবার রাতে রুহুল আমিনকে সুবর্ণচরের উত্তর ওয়াপদা এলাকার একটি মাছের খামার থেকে, আর মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ নম্বর আসামি মো. বেচুকে সেনবাগ উপজেলার কেশাপাড় গ্রামের একটি ইটভাটা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করা অপর তিনজন হলেন প্রধান আসামি মো. সোহেল (৪০), মো. স্বপন (৩৫) ও বাদশা আলম ওরফে কুড়াইল্যা বাসু (৪০)।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী (৪০) বর্তমানে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বুধবার দুপুরে হাসপাতালে তিনি বলেন, সারা শরীরে নির্যাতনের জায়গাগুলোতে রক্ত জমে কালো হয়ে গেছে। ব্যথার কারণে তিনি নড়াচড়া করতে পারছেন না।
ওসি নিজাম উদ্দিন বৃহস্পতিবার সকালে জানান, গ্রেফতার হওয়া আসামিরা প্রাথমিকভাবে গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।গ্রেফতার হওয়া আসামি বাদশা আলমের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জানুয়ারি ০৩, ২০১৮)