আফ্রিদির ব্যাটে কুমিল্লার জয়
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ১৪.২ ওভারে ৮৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। জয়ের জন্য তখন দরকার ছিল ৩৪ বলে ৪৫ রান।
স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে ছিলেন শহীদ আফ্রিদি। মূলত তাকে নিয়েই ভয় ছিল সিলেট সিক্সার্সের। যাকে নিয়ে আতঙ্ক সেই আফ্রিদির ঝড়েই উড়ে গেল তারা। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্টে তার ২৫ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৩৯ রানে পরাজয় বরণ করতে হলো সিলেটকে। ৪ উইকেটের দুর্দান্ত জয়ে বিপিএলে শুভসূচনা করল কুমিল্লা।
১২৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সূচনাটা মোটেই শুভ হয়নি কুমিল্লার। ২১ রানের মধ্যেই ফিরে যান এভিন লুইস ও ইমরুল কায়েস। লুইসকে আল-আমিন ও ইমরুলকে তুলে নেন মোহাম্মদ ইরফান। পরে স্টিভেন স্মিথকে নিয়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন তামিম ইকবাল। ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করেন তারা। দেখেশুনেই এগোচ্ছিলেন এ জুটি। তবে হঠাৎই খেই হারান স্মিথ। আল-আমিনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ১৬ রান করেন অধিনায়ক।
স্মিথ ফিরলে ক্রিজে আসেন শোয়েব মালিক। তবে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেনি তিনি। সন্দীপ লামিচানের বলে সাব্বিরকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। অল্পক্ষণ পর নেপালি লেগস্পিন বিস্ময়ের অসাধারণ গুগলিতে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন আনামুল হক। এতে চাপে পড়ে কুমিল্লা।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকলেও একপ্রান্ত আগলে রাখেন তামিম। একপর্যায়ে তিনিও হার মানেন। ৩৪ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ৩৫ করে ড্যাশিং ওপেনার রানআউটে কাটা পড়লে খেলা জমে ওঠে। তবে সিলেটের লড়াই ছিল সেই পর্যন্তই। বাকি সময় ছিল আফ্রিদি শো। প্রতিপক্ষের ওপর রীতিমতো তাণ্ডব চালান তিনি। ব্যাটকে তলোয়ার বানিয়ে আল-আমিন, তাসকিনদের করেন কচুকাটা। তাকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন সাইফউদ্দিন। শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনার ম্যাচে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন তারা। আফ্রিদি ৩৯ ও সাইফ ৫ রানে অপরাজিত থাকেন। সিলেটের হয়ে আল-আমিন ও লামিচানে নেন ২টি করে উইকেট।
এর আগে রবিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে বোলিং নেন কুমিল্লা অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। ফলে প্রথমে ব্যাট করতে নামে সিলেট। তবে শুরুটা শুভ হয়নি তাদের। প্রথমেই বিপদে পড়েন তারা। মেহেদি হাসানের শিকার হয়ে ফেরেন লিটন কুমার দাস।
প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটে কাটা পড়েন ডেভিড ওয়ার্নার। ফেরার আগে ১৪ রান করেন সিলেট অধিনায়ক। এরপর খেলা ধরার চেষ্টা করেন আফিফ হোসেন। তবে ক্রিজে স্থির ছিলেন না। এর খেসারত গুনে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ব্যক্তিগত খাতায় তোলেন ১৯ রান।
খানিক বাদেই হৃদয়কে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে শহীদ আফ্রিদি ফেরালে চাপে পড়ে ‘চায়ের দেশের’ দলটি। এ পরিস্থিতিতে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছয় মাস নিষিদ্ধ সাব্বির রহমান। দলীয় ৫৬ রানে মেহেদী হাসানের স্পিনে নীল হয়ে ফেরেন তিনি।
বিপর্যয়ে দলের হাল ধরেন নিকোলাস পুরান ও অলোক কাপালি। তাতে দুরন্ত গতিতে ছুটে সিলেট। হু হু করে বাড়ে রান। দারুণ খেলছিলেন তারা। তবে হঠাৎই খেই হারান পুরান। মোহাম্মদ শহীদের বলে আবু হায়দার রনির তালুবন্দি হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। ফেরার আগে ২৬ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন পুরান।
কয়েক মিনিট পর শহীদের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে ফেরেন তাসকিন আহমেদ। সেই রেশ না কাটতেই ফেরেন অলোক কাপালি। ফেরার আগে গুরুত্বপূর্ণ ১৯ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১২৭ রান করে সিলেট। ভিক্টোরিয়ানসদের হয়ে মেহেদী, সাইফ, শহীদ ২টি করে এবং আফ্রিদি নেন ১টি উইকেট।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জানুয়ারি ০৬, ২০১৯)