বিক্ষোভের পর বিমানবন্দর সড়ক ছাড়লো শ্রমিকরা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ মুখ বিমানবন্দর সড়কে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখানোর পর রাস্তা ছেড়ে ফিরে গেছে পোশাক শ্রমিকরা।
রবিবার বেলা পৌনে ২টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানন্দরের সামনে গোল চত্বর থেকে উঠে যাওয়ার আগে তারা সোমবার সকালে আবারও বিক্ষোভে নামার ঘোষণা দিয়েছেন।
বিমানবন্দর পুলিশের সহকারী কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, উত্তরা এলাকার বিভিন্ন গার্মেন্টের শত শত শ্রমিক সকাল ৯টার দিকে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে।
উত্তরা আজমপুর থেকে জসিমউদ্দিন পর্যন্ত সড়কে তাদের অবস্থানের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঢাকার উত্তর খান ও দক্ষিণ খান এলাকা থেকেও শ্রমিকরা এসে সড়কে অবস্থান নিতে শুরু করে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের একটি অংশ বেলা ১১টার দিকে বিমানবন্দরের সামনের গোলচত্বরে সামনে অবস্থান নেয়। পাশাপাশি জসিম উদ্দিন, রাজলক্ষ্মী, আজমপুর, হাউজবিল্ডিং, আবদুল্লাহপুর এলাকায় তাদের বিক্ষোভ চলতে থাকে।
আন্দোলনরত এক শ্রমিক জানান, সকালে সহকর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তিনি বিক্ষোভে এসেছেন।
আমি জানতাম না আন্দোলনের বিষয়ে। আমার অফিসে খবর দিছে অন্যরা। সেই খবর শুইনা এইখানে আসছি। আমাদের দাবি আমাদের বেসিক সাড়ে আট হাজার টাকা থাইকা বাড়াইয়া সাড়ে দশ হাজার টাকা করুক।
দক্ষিণ খানের চালাবন এলাকার ইপিলিয়ন গার্মেন্টের কর্মী সুমাইয়া অভিযোগ করেন, তাদের ওপর নানা ধরনের ‘অন্যায়’ করা হয়, এজন্য তারা পথে নেমেছেন।
আমাদের বেতন যা বাড়ানোর কথা ছিল তা তো বাড়ায়নি। উল্টো কাজের পরিমাণ বেড়ে গেছে। প্রতি ঘণ্টায় টার্গেট দিয়া দেয়। টার্গেট ফিলাপ না করতে পারলে গালিগালাজ করে।
ক্যাসিওপিয়া গার্মেন্টেসের এক কর্মী বলেন, ‘কাজের চাপে পেশাবও করতে যাইতে পারি না। টার্গেট পূরণ না করতে পারলে বকাঝকা, মারধর ও করে।’
এদিকে বিমানবন্দর সড়কের উভয়দিকে যান চলাচল বন্ধ থাকায় বিদেশগামী যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অনেককে কুড়িল থেকে ব্যাগ হাতে হেঁটে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়।
হাউজবিল্ডিং কাউন্টার থেকে বেলা সাড়ে ৯টায় রওনা হয়ে রাস্তায় আটকা পড়ে মাওয়াগামী প্রচেষ্টা পরিবহনের একটি বাস।
বাস চালকের সহকারী জানান, তারা উত্তরার বিভিন্ন গলি দিয়ে বিমানবন্দরের কাছাকাছি আসতে পারলেও এগোতে পারছেন না।
এইহানে আওয়ার পর আর যাইতে পারি না। আটকাইয়া দিছে। কাছের যাত্রীরা নাইমা গেছে। যেরা দূরে যাবে তারা বইসা আছে। যাইতে পারুম কি না বুঝবার পারতেছি না।
দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ করে বেলা পৌনে ২টার দিকে বিমানন্দরের সামনে গোল চত্বরের অবস্থান ছেড়ে উঠে যান বিক্ষোভকারীরা। তারা ঘোষণা দিয়ে যান, দাবি আদায়ে সোমবার সকালে আবারও তারা সড়কে নামবেন।
শ্রমিকরা উঠে যাওয়ার পর বেলা ২টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জানুয়ারি ০৬, ২০১৮)