দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আপিল বিভাগে বিচারাধীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।

আনিসুল হক বলেন, ‘ট্রাইবুন্যালে নিষ্পত্তির পর বেশ কিছু মামলা এখন আপিল বিভাগের বিচারাধীন রয়েছে। এ মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আমরা উদ্যোগ নেব।’

রবিবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারকদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার বিরুদ্ধে দেওয়া আদালতের দণ্ডাদেশ কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেকোনো অপরাধী যারা বিদেশে পালিয়ে আছেন তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা খাটানোর ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত তৎপর।’

অনুষ্ঠানে বিচারকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ যাতে আদালতের বাইরে বিরোধ নিষ্পত্তি করে সে বিষয়ে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তাঁদের ভালোভাবে বুঝাতে পারলে তারা এটিকে গুরুত্ব সহকারে নিবে এবং সেই চেষ্টা করবে।’ তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোতে মামলা বা বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আদালতের বাইরে বিরোধ নিষ্পত্তির পরামর্শ দেয় সেসব দেশের আদালত। ওই পরামর্শের কারণে সেখানে শতকরা ৯০ ভাগ মামলা আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি হয়। এভাবে তাদের জুডিশিয়ারির ওপর চাপ কমে আসছে।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচারকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। কেবল আইনের শাসনই নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গণতন্ত্র সুসংহতকরণ এবং দারিদ্র্য দূরীকরণেও জুডিশিয়ারি বিশেষ করে কোয়ালিটি জুডিশিয়ারির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই জনগণকে কোয়ালিটি জুডিশিয়ারি উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার বিচার বিভাগকে সবধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। মামলাজট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে।’

আনিসুল হক বলেন, ‘মনে রাখতে হবে যে বিচারক হয়ে ওঠার পেছনে দেশের গরিব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অবদান রয়েছে। আর বিচারকদের কর্মক্ষেত্রই হলো বিচারপ্রার্থী এসব মানুষের শেষ ভরসাস্থল। তাই বিচারিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণ বিচার বিভাগকে কোন্ দৃষ্টিতে দেখছে কিংবা তাদের চোখে ন্যায়বিচারের ধারণাই বা কেমন সেটিকে বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে। মোটকথা বিচারপ্রার্থী জনগণের অল্প সময়ে, অল্প ব্যয়ে ও সহজে ন্যায় বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করণে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। নিছক গতানুগতিক বা দায়সারা ভাব পরিহার করে কর্মক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিতে হবে।’

বিচারকদের বিন্দুমাত্র লোভ কিংবা অসততার কারণে বিচার বিভাগ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে যাতে কোনো হতাশা বা বিরূপ ধারণার সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিচারকদের পেশার গুরুত্ব যথাযথভাবে অনুধাবন করেই বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক বিচার বিভাগের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জানুয়ারি ১৩, ২০১৯)