ছুটির দিনেও বাণিজ্য মেলায় উপচেপড়া ভিড়
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার নবম দিন চলছে আজ শুক্রবার।
মেলা শুরুর দ্বিতীয় শুক্রবার ও সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় আজ ছিল উপচেপড়া ভিড়। ৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৪তম আসর। হাজার হাজার ক্রেতা-দর্শনার্থী মেলা প্রাঙ্গণে আসছেন। ঘুরে-ফিরে পছন্দের পণ্য কিনে ঘরে ফিরেছেন।
দুপুরের দিকে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, দলবেঁধে পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে সকাল থেকে মেলায় আসতে থাকেন মানুষ। বিকেলে এটি ছোটখাটো জনসমুদ্রে পরিণত হয়। প্রবেশ টিকিট ক্রয়ের পর্যাপ্ত বুথ থাকায় মেলায় ঢুকতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি ক্রেতা-দর্শনার্থীদের।
মেলার ভেতরেও তিলধারণের ঠাঁই ছিল না। এরপরও দর্শনার্থীদের চোখ-মুখের ভাষা বলে দিচ্ছিল, এই বিপুল জনসমাগমও তাদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস কমাতে পারেনি। সীমিত বিনোদনকেন্দ্রের এ শহরে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মিলনস্থলে পরিণত হয় মেলা।
মেলায় ঘুরতে ঘুরতে কথা হলো রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কয়েকজনের সঙ্গে। যাদের অধিকাংশই দলবেঁধে এসেছেন।
তারা বললেন, নির্দিষ্ট কোনও কিছু কেনার পরিকল্পনা তাদের নেই। ভিড়টাও খারাপ লাগছে না। বরং বেড়াতে এসে অনেক পরিচিত মানুষের দেখা পেয়ে ভালোই লাগছে।
রবিউল সুমন নামের একজনের সাথে কথা হয়। তিনি পেশায় কলেজের শিক্ষক এবং একটি পরিবারের অভিভাবক। সঙ্গে ছিল সাতজন। তিনি বললেন, পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। সকাল থেকে সব স্টল ঘুরলাম, অনেক কিছু দেখলাম। পছন্দ হয়েছে কিছু পণ্য, যা ফেরার সময় নিয়ে যাব।
শুধু যে ঢাকা শহরের বিভিন্ন মহল্লা থেকে লোকজন মেলায় এসেছেন তা নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও লোকজন এসেছেন মেলায় বেড়ানো আর কেনাকাটার জন্য। গাজীপুর থেকে আসা গৃহবধূ ফরিদা হোসেন বললেন, বাড়িতে সারা বছরের জন্য যেসব তৈজসপত্র লাগে তার সবটা বাণিজ্য মেলা থেকেই কেনা হয়। কিছু কিনে রাখি উপহার দেওয়ার জন্য।
বিক্রয়কর্মীদের মতে, গেল কয়েকদিনের তুলনায় বেচাবিক্রির পরিমাণ সন্তোষজনক। বলা যায় আজ থেকে বেচাবিক্রি শুরু। এতোদিন সবাই ঘুরে ঘুরে পণ্য দেখেছেন। কিন্তু আজ ক্রেতার সংখ্যা বেশি। যারা আসছেন তারা কেনার জন্যই আসছেন। যেহেতু ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চলবে তাই বিক্রয়কর্মীরা আশা করছেন মেলার শেষ দিকে বেচাকেনা ভালো হবে।
এদিকে মেলার দর্শকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, নির্দিষ্ট কোনও কিছু কেনার পরিকল্পনা নিয়ে তারা আসেননি। মূল উদ্দেশ্য বেড়ানো। নতুন কী জিনিসপত্র এল, দরদাম কেমন এসব যাচাই-বাছাই করা। পছন্দ হলে কিছু কেনাকাটা করা।
এদিকে বাণিজ্য মেলায় শিশুদের বাড়তি আনন্দ দিতে রয়েছে বিনোদন পার্ক। শিশু-কিশোরদের বিনোদনের এ জোনটি ভিআইপি গেট দিয়ে প্রবেশ করে বাম দিকে গেলেই দেখা যাবে। এখানে শিশুদের জন্য রয়েছে ৮ থেকে ৯টি রাইড। এ জায়গাটিতে ঢুকলেই শুনতে পাওয়া যায় শিশুদের চিৎকার ও হৈ-হুল্লোড়ের শব্দ।
এ আসরে বাংলাদেশ ছাড়াও ২৫টি দেশের ৫২টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়েছে। মেলার গেট ও বিভিন্ন স্টল প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকছে। প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রবেশের জন্য টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। এবারই প্রথম মেলার টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জানুয়ারি ১৮, ২০১৯)