নজরদারি বেড়েছে রোহিঙ্গা শিবিরে
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : আসন্ন টেকনাফ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রোহিঙ্গাদের তৎপরতা ঠেকাতে নিপীড়িত এই জনগোষ্ঠীর আশ্রয় শিবিরগুলোতে নজরদারি বাড়িয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোনো পক্ষ যাতে তাদের ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩০টি শিবিরে অবস্থান করছে। আগামী ২৪ মার্চ টেকনাফ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
টেকনাফ নির্বাচন অফিস জানায়, নির্বাচনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা তৎপর রয়েছে। টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোট তিন প্রার্থী নির্বাচন করছেন। তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী (নৌকা), বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ (আনারস) ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আলম (মোটর সাইকেল)। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যানে ৩ জন প্রার্থী লড়ছেন। এই উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজার ৮৮জন।
নির্বাচন উপলক্ষে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম।
তিনি জানান, উপজেলা নির্বাচনে যাতে কোন পক্ষই রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করতে না পারে সেবিষয়ে শরর্ণাথী শিবিরে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কঠোর নজরদারি রয়েছে। বিশেষ করে যেসব রোহিঙ্গা শিবিরে অপরাধ বেড়েছে, সেখানে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও আনসার বাহিনীর টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে গোয়ান্দার নজরদারিও।
জানতে চাইলে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, রোহিঙ্গা শিবিরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের টহল বাড়ানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে রোহিঙ্গাদের চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল মতলব বলেন, এখানেও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া আগে থেকেই সব রোহিঙ্গার কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, যাতে কেউ নিবার্চনীয় কোন কাজে অংশ না নেয়।
র্যাব-১৫ টেকনাফ ক্যাম্প ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট মির্জা শাহেদ মাহতাব বলেন, নির্বাচনে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে কেউ যাতে ফায়দা নিতে না পারে সেজন্য রোহিঙ্গা শিবিরে র্যাবের আলাদা দুটি দল কাজ করছে। নির্বাচনে রোহিঙ্গারা যাতে কোনোভাবেই সমস্যা হয়ে না দাঁড়ায়, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে র্যাব।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল হাসান বলেন, রোহিঙ্গাদের কোনোভাবেই নির্বাচনে সর্ম্পৃক্ত হতে দেওয়া হবে না। রোহিঙ্গা শিবিরে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজনে নির্বাচনের সময় শিবির থেকে কোনো রোহিঙ্গাকে বের হতে দেওয়া হবে না।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/মার্চ ১৯,২০১৯)