কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে পৃথক 'বন্দুকযুদ্ধে' রোহিঙ্গা নারীসহ তিনজন ‘ইয়াবা কারবারি’ নিহত হয়েছেন। 
রবিবার (৩১ মার্চ) ভোরে টেকনাফের মৌলভীবাজার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে এবং একই উপজেলার দমদমিয়া নাফ নদীর ওমরখাল এলাকায় বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ছয়টি এলজি বন্দুক, ২০ হাজার পিস ইয়াবা ও ১৮টি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও টেকনাফ ২ নম্বর বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন- হ্নীলা ইউনিয়নের আলী আকবর পাড়া এলাকার মিয়া হোসনের ছেলে মাহামুদুর রহমান (২৮), হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আফছার (২৫) ও লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি/৬ ব্লকের বদরুল ইসলামের স্ত্রী রুমানা আকতার (২০)।

ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, রবিবার রাতে একদল কারবারির ইয়াবা বিক্রির খবর পেয়ে টেকনাফ উপজেলার মৌলভীবাজার এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা কারবারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। বেশ কিছুক্ষণ গোলাগুলির পর ইয়াবা কারবারিরা পিছু হটে। পরে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ দুজনকে পাওয়া যায়। তাদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক কক্সবাজারে রেফার করেন। পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। লাশ দুটি কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।

ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় টেকনাফ থানা পুলিশের একজন এসআইসহ তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হলেন— এসআই দীপক বিশ্বাস, সহকারী উপ-পরিদর্শক এএসআই আমির ও কনস্টেবল শরিফুল। তাদের টেকনাফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৫-৬টি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় টেকনাফ থানায় পৃথক মামলা হয়েছে।

এদিকে, টেকনাফ ২ নম্বর বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার জানিয়েছেন, রবিবার (৩১ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া ওমরখাল নাফনদী এলাকায় টহলে বের হন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবির) সদস্যরা। এ সময় কিছু লোক মিয়ানমার থেকে ওমরখাল পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করে। তাদের থামার সংকেত দেয় বিজিবি। কিন্তু বিজিবির সংকেত অমান্য করে উল্টো বিজিবি টহলদলের ওপর অতর্কিতে গুলি বর্ষণ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। এতে বিজিবি টহলদলের একজন সদস্য আহত হন। এ সময় আত্মরক্ষার্থে বিজিবি পাল্টা গুলি চালায়। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ১০-১৫ মিনিট গোলাগুলি হয়। অস্ত্রধারী চোরাকারবারিরা গুলি করতে করতে খালের কিনারা দিয়ে পালিয়ে যায়। গুলির শব্দ থামার পর, টহলদলের সদস্যরা এলাকা তল্লালি করে একজন নারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নৌকার মধ্যে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয়রা তাকে রোহিঙ্গা নারী বলে শনাক্ত করেন। এ সময় ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও তিনটি লোহার ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়। লাশটি টেকনাফ থানার মাধ্যমে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/মার্চ ৩১, ২০১৯)