রক্তপাত পরিহার করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আহ্বান সিইসির
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা বলেছেন, পাহাড়ের জনপদ যারা অশান্ত করে তুলেছেন তাদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা সংঘাতের পথ পরিহার করুন, অনাকাঙ্ক্ষিত সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে আসুন। নিজেরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন অন্যদেরকেও নিরাপদে বসবাস করার সুযোগ দিন।
তিনি বলেন, অস্ত্র দিয়ে প্রাণহানির মধ্যে দিয়ে রক্তপাত করে কোনদিন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না সংঘাত শুধু সংঘাত বাড়াতে থাকে দুটি হত্যা হলে চারটি ‘প্রতিহত্যা’র পথ সৃষ্টি হয়। আপনারা জানেন সুন্দরবনের জলদস্যুরা বাংলাভাইদের জঙ্গীরা কক্সবাজারেরর ইয়াবা ব্যবসায়ীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে, আপনারাও এই হত্যকাণ্ড-রক্তপাতের পথ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন।
রোববার (৭ এপ্রিল) বাঘাইছড়ি উপজেলার সম্মেলন কক্ষে দুপুর ১২টায় এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের দায়িত্ব শেষে ফেরার পথে ব্রাশফায়ারে সাতজন নিহতের ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের মধ্যে অনুদান প্রদান উপলক্ষে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
এসময় নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দিন, সেনাবাহিনীর চট্রগ্রাম ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের মহাপরিচালক ব্রি. জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রি. জেনারেল হামিদুল হক, বিজিবির খাগড়াছড়ি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল গাজী মোহাম্মাদ সাজ্জাদ, ২৭ বিজিবির অধনায়ক লে. কর্নেল মাহাবুবুল ইসলাম, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক সহিদুল ইসলাম, রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার আলমগীর কবির, খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আহমারউজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় শেষে নিহত ও আহতদের স্বজনদের হাতে চেক বিতরণ করেন সিইসি।
নিহত সাতজনের মধ্যে ৪ জন আনসার ভিডিপি সদস্য, প্রিজাইডিং পোলিং অফিসার ২ জন, প্রার্থীর এজেন্ট ছিলেন ১ জন। গুরুতর আহত হয়েছেন ১৯ জন ও সাধারণ আহত হয়েছেন ১৪ জন।
নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা, গুরুতর ১৯ জন আহতদের এক লাখ টাকা এবং সাধারণ আহত ১৪ জনকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে চেক প্রদান প্রদান করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ সোমবার দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হয় বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে দিনভর দায়িত্বপালন শেষে নির্বাচনী সরঞ্জামসহ উপজেলার সাজেকের কংলাক, মাচালং, বাঘাইহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ছেড়ে গাড়িবহর নিয়ে উপজেলা সদরে ফিরছিলেন, নির্বাচনী কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নিরাপত্তাকর্মীদের দল। দিঘীনালা-মারিশ্যা সড়কের ৯ কিলোমিটার নামক এলাকায় পৌঁছা মাত্র নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বহনকারী জিপগাড়ি লক্ষ্য করে অতর্কিত এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা।
এতে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ৬ জন। যাদের মধ্যে ছিলেন নির্বাচনী দায়িত্বপালন করা শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আনসার-ভিডিপি সদস্য। রাতে বাঘাইছড়ি থেকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম নেয়ার পথে মারা যান গুলিবিদ্ধ শিক্ষক মো. তৈয়ব।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশ ও আনসার-ভিডিপি সদস্য, স্কুল-কলেজের শিক্ষকসহ আহত হন ৩৩ জন।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এপ্রিল ০৭, ২০১৯)