দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে অব্যাহত পতনের প্রতিবাদে সোমবার (৮ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এই মানববন্ধন করা হয়েছে।

মানববন্ধনে বিনিয়োগকারীরা বাজার স্থিতিশীলতায় ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। এরমধ্যে রয়েছে ইব্রাহীম খালেদের তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা। এছাড়া জেড ক্যাটাগরি এবং ওটিসি মার্কেটের বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানে বাধ্য করা ইত্যাদি।

মানববন্ধনে সংগঠনটির সভাপতি মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী বলেন, শেয়ারবাজারে পতন হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। পাতানো খেলার মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম প্রভাব ফেলানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে ২০১০ সালের রাঘব বোয়ালরা জড়িত। যাদের নাম ইব্রাহিম খালেদের তদন্তে উঠে এসেছিল। তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে পারলেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের বর্তমান মন্দাবস্থায়ও আইসিবি শেয়ার ক্রয়ের ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় রয়েছে। বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত।

মিজান-উর-রশিদ বলেন, বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজার অর্থনীতির মূল উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। সরকার দেশের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় অর্থ শেয়ারবাজারের সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোতে এমন ভাবেই চলে আসছে। কিন্তু আমাদের দেশে এর অবস্থান পুরটাই ভিন্ন। শেয়ারবাজারকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো একটি লুটপাট করার জায়গা হিসেবে ধরে নিয়েছে এখানে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা না বুঝেই সেই লুটপাটের শিকার হচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ৭৬ টি কোম্পানি ইস্যু মূল্যের নিচে অবস্থান করছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। সরকার বিএসইসি'র চেয়ারম্যান হিসেবে প্রফেসর খায়রুল হোসেনকে দায়িত্ব দিয়েছে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে, ইস্যুয়ার কোম্পানির স্বার্থের কথা চিন্তা করার জন্য নয়। অথচ বিএসইসি'র সব পদক্ষেপ ইস্যুয়ার কোম্পানিগুলোর পক্ষে যাচ্ছে।

এসময় তিনি বিএসইসি'র চেয়ারম্যান খায়রুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে বলেন, চেয়ারম্যানর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আপনি যে সকল কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়েছেন, অন্তত তাদের সম্পর্কে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আপনার জবাবদিহিতার প্রয়োজন আছে।

সংগঠনের প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, প্লেসমেন্টের নামে যে বাণিজ্য হচ্ছে এটা বন্ধ করতে হবে। প্লেসমেন্টের মাধ্যমে যে শেয়ার বিক্রি হয় এই শেয়ারের লকিং কোড কমপক্ষে দুই বছর করতে হবে।

সোমবার দুপুরে ডিএসই'র সামনে মানববন্ধনটি শুরু হয়। সেখান থেকে শ্লোগান দিতে দিতে সাধারন বিনিয়োগকারীরা শাপলা চত্তর প্রদক্ষিণ করে। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে আগামীকালও একই জায়গায় বিনিয়োগকারীদের নিয়ে মানববন্ধন করার কথা জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এপ্রিল ০৮, ২০১৯)