জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ গ্রেফতার
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : গোপন নথি প্রকাশ করে বিশ্বব্যাপী সাড়া ফেলা উইকিলিকসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করেছে ব্রিটিশ পুলিশ।
লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়ার প্রায় ৭ বছর পর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা হয় বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আদালতে আত্মসমর্পণ না করায় অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে যত দ্রত সম্ভব বিচারিক আদালতে হাজির করা হবে।
এর আগে ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো জানান, বারবার আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করায় ইকুয়েডর জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
তবে উইকিলিকসের পক্ষ থেকে করা এক টুইটে দাবি করা হয়েছে, 'আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের' কথা বলে ইকুয়েডর অবৈধভাবে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করেছে।
৪৭ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতারের পর এক টুইটে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেছেন, 'আমি নিশ্চিত করতে পারি যে, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ এখন পুলিশ হেফাজতে আছেন এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে যুক্তরাজ্যে বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।'
২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ গোপন তারবার্তা ও নথি ফাঁস করে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে উইকিলিকস ও এর প্রতিষ্ঠাতা অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। সেই গোপন তারবার্তায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মার্কিন কূটনীতিকদের নানা তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে ভীষণ বিপাকে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
উদ্ভূত পরিস্থিতি অ্যাঞ্জাসকে নিজেদের জিম্মায় নিতে নানান তৎপরতা শুরু করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ, যদিও তাদের সেই তৎপরতায় সফলতা আসেনি। এরই মধ্যে দুই নারীকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে ২০১০ সালের আগস্টে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে সুইডেনের আদালত। শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন অ্যাসাঞ্জ।
এরপর একই বছরের ডিসেম্বরে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করে লন্ডন পুলিশ। পরে জামিন পান তিনি। পরে ২০১২ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের এক আদেশে বলা হয়, অভিযোগের বিষয়ে জেরা করার জন্য অ্যাসাঞ্জকে সুইডিশ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে হবে।
এ অবস্থায় ২০১২ সালের ১৯ জুন লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে ঢুকে রাজনৈতিক আশ্রয় চান অ্যাসাঞ্জ। একই বছরের আগস্টে ইকুয়েডর রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের আবেদন মঞ্জুর করে। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত ইকুয়েডর দূতাবাসে অ্যাসাঞ্জকে এক ধরনের বন্দি জীবনযাপন করতে হয়। ইকুয়েডর দূতাবাসে অবস্থানের সময় বাইরে বের হতে পারেননি তিনি। তার দাবি ছিল, দূতাবাস থেকে বের হলে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে, যাতে মার্কিন কর্তৃপক্ষ উইকিলিকসের সম্পর্কিত কার্যক্রম নিয়ে তাকে প্রশ্ন করতে পারে।
অ্যাসাঞ্জ ইকুয়েডর দূতাবাসে অবস্থান শুরুর প্রায় পাঁচ বছর পর ২০১৭ সালের মে মাসে সুইডেনের পাবলিক প্রসিকিউশনের পরিচালক অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে থাকা ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/এপ্রিল ১১,২০১৯)