ধর্ষণের পর মিমাংসার চেষ্টা, চারদিন পর মামলা
আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার চার দিন পর অবশেষে সোমবার রাতে মামলা নিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আটক লিটনকে (২৪) গ্রেফতার দেখানোর পর মঙ্গলবার সকালে লিটনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত বৃহস্পতিবার বিকাল চারটার দিকে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের প্রভাকরদী এলাকার দরিদ্র কাঠমিস্ত্রীর মেয়ে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে (১৪) একই এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে ছেলে লিটন মিয়া (২৪) ও আলী মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৫) জোর করে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে রাস্তা থেকে তুলে পার্শ্ববর্তী মোবারক মিয়ার পরিত্যক্ত গরুর খামারে নিয়ে যায়। সেখানে সাইফুলের সহযোগিতায় লিটন মিয়া মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। পরে ওই স্কুলছাত্রী বাড়িতে ফিরে বাবা-মাকে ঘটনাটি জানালে তারা লিটন ও সাইফুলের পরিবারকে জানান। এরপর লিটন ও সাইফুলের পরিবার স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় নানাভাবে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। স্থানীয়ভাবে সমাধান করে দেওয়া হবে বলে একটি প্রভাবশালী মহল ওই স্কুল ছাত্রীর পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে করে।
স্কুলছাত্রীর মা জানান, তাদেরকে বিশ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এমনকি তারা থানায় গিয়ে যাতে অভিযোগ দিতে না পারে সেজন্যে তাদের পরিবারের সদস্যদের নজরদারিতে রাখা হয়। প্রভাবশালীদের নজর এড়িয়ে রোববার ওই স্কুলছাত্রীর মা লিটন ও সাইফুলসহ তাদের বাবার বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ লিটনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। থানায় নিয়ে আসার পরও প্রভাবশালী পক্ষটি মিমাংসার জন্য চেষ্টা চালাতে থাকে। সোমবার অভিযুক্ত লিটনের সঙ্গে স্কুলছাত্রীর বিয়ের মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার সর্বশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু স্কুলছাত্রীর বয়স ১৪ এবং ঘটনাটি স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ বিয়ের বিষয়ে পিছু হটে। অবশেষে থানা পুলিশ সোমবার রাত ১০টার দিকে লিখিত অভিযোগটি ধর্ষণের মামলা হিসেবে গ্রহণ করে লিটনকে গ্রেফতার দেখায় এবং মঙ্গলবার সকালে লিটনকে আদালতে পাঠায়।
আড়াইহাজার থানার ওসি আক্তার হোসেন জানান, ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে লিটন, সাইফুল এবং তাদের বাবার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। লিটনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের কয়েকটি টিম মাঠে কাজ করছে।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/এপ্রিল ১৬,২০১৯)