‘বন্দুকযুদ্ধে’এবার শীর্ষ সন্ত্রাসী ছেলেও নিহত
বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ায় সন্ত্রাসীদের দুটি গ্ৰুপের কথিত বন্দুকযুদ্ধে জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী রাফিদ আনাম ওরফে স্বর্গ (২২) নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দিনগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে বগুড়া শহরের উপশহর-ধরমপুর সংযোগকারী ধুন্দল ব্রিজের দক্ষিণ পশ্চিম পার্শ্বে সুবিল খালপাড়ে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ দাবি করছে।
এদিকে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে বন্দুকযুদ্ধে সন্ত্রাসী স্বর্গ নিহত হবার সংবাদ জানাজানি হলে সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেন।
নিহত স্বর্গ বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া শহীদ নগর এলাকার মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে। লিয়াকতও বগুড়া শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একজন এবং পেশাদার খুনি হিসেবেও ছিলেন পুলিশের তালিকাভুক্ত। ২০০৪ সালে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন লিয়াকত।
পুলিশ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে ধুন্দল ব্রিজ এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শুনে পুলিশের কয়েকটি দল সেখানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। তাকে উদ্ধার করে টহল পুলিশের গাড়িতে দ্রুত বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় হাসপাতালে উপস্থিত লোকজন নিহত যুবক বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া শহীদ নগর (খান্দার) এলাকার সন্ত্রাসী লিয়াকতের ছেলে সন্ত্রাসী স্বর্গ বলে শনাক্ত করে।
এদিকে, বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, এক রাউন্ড গুলি এবং একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী এবং সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস.এম বদিউজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।
বগুড়া জেলা পুলিশের গণমাধ্যম শাখার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ- সার্কেল) সনাতন চক্রবর্তী জানান, পুলিশের রেকর্ডে দেখা যায় নিহত স্বর্গের নামে সদর এবং শাজাহানপুর থানায় খুন, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। সাম্প্রতিককালে শাজাহানপুরের জামাদারপুকুর এবং শহরের খান্দার মালগ্রাম এলাকায় তিনি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।
উল্লেখ্য, কিশোর বয়সেই স্বর্গ দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে বগুড়া শহরে পরিচিত হয়ে ওঠেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে স্বর্গ দুইটি খুনের সঙ্গে জড়িত হয়। একপর্যায়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যায়। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকাকালে সেখানেই সন্ত্রাসীদের সঙ্গে একটি গ্রুপ তৈরি করে। গত তিনমাস আগে সরকারি দলের এক নেতার তদবিরে স্বর্গ ও লিখন নামের দুই সন্ত্রাসী জামিনে মুক্তি পান।
এরপর তারা স্বর্গের নানা বাড়ি নন্দীগ্রাম থানা এলাকায় আশ্রয় নিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। এছাড়াও স্বর্গ জামিনে মুক্তি পেয়ে বগুড়া সদর থানার সাবেক এক ওসিকে হত্যার হুমকি দেয়। ২০০৪ সালে তার বাবা লিয়াকত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার সময় ওই ওসি বগুড়া সদর থানায় কর্মরত ছিলেন।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/এপ্রিল ১৯,২০১৯)