দিরিপোর্ট২৪ ডেস্ক : শহীদ নূর হোসেন দিবস রবিবার। সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী লড়াইয়ের প্রতীক নূর হোসেন ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।

আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বাম নেতৃত্বাধীন জোট স্বৈরশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পতনের লক্ষ্যে ওইদিন ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন নূর হোসেন।তার বুক ও পিঠে সাদা রঙে লেখা ছিল ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান।

মিছিলটি ঢাকা জিপিও’র সামনে জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি এলে পুলিশের গুলিতে নূর হোসেনসহ তিনজন শহীদ হন। আহত হন আরও অনেকে।

শহীদ অপর দুজন হলেন- যুবলীগ নেতা নুরুল হূদা বাবুল এবং আমিনুল হূদা টিটু।

এ ঘটনার পর আলোড়িত হয় সারা দেশে। বিরোধী দলগুলো ১১ ও ১২ নভেম্বর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ঘোষণা করে।

গণতন্ত্রকামী মানুষ ফেটে পড়েন বিক্ষোভে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন আরও ত্বরান্বিত হয়। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদ পদত্যাগ করেন।

১৯৯৬ সালে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ জাতীয় সংসদে নূর হোসেনের মৃত্যুর জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তার দল জাতীয় পার্টি অবশ্য এখন ১০ নভেম্বর গণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করে।

শহীদ নূর হোসেনের পৈত্রিক বাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ঝাতবুনিয়া গ্রামে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তার পরিবার ঢাকার ৭৯/১ বনগ্রাম রোডে বসবাস করতে থাকেন।

শহীদ নূর হোসেনের বাবা মুজিবুর রহমান ছিলেন পেশায় আটো-রিকশা চালক। মায়ের নাম মরিয়ম বিবি। অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর তিনি পড়াশুনা বন্ধ করে মোটরচালক হিসেবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

নূর হোসেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের বনগ্রাম শাখার প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার নামে স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করা হয়। এছাড়া তিনি যে স্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেই জিরো পয়েন্টের নামকরণ করা হয় নূর হোসেন স্কয়ার।

শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষ্যে রবিবার বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করবে।

(দিরিপোর্ট২৪/ওএস/এইচএস/এমডি/নভেম্বর ০৯, ২০১৩)