ডা. মো. শাহিনুর রহমান: হার্টে যে সমস্ত রোগগুলো হয়ে থাকে তার মধ্যে হার্টের রক্তনালীতে চর্বি জমা (heart block), হার্টে রিং লাগানো, হার্টের ভাল্ব নষ্ট হওয়া, হার্টে ছিদ্র হওয়া, হার্টের বাইপাস সার্জারী, ওপেন হার্ট সার্জারী, হার্টে পেসমেকার(pacemaker)লাগানোর মতো জটিল হৃদরোগ।

রোগের কারণ:

রোগ এবং রোগের কারণ থাকে মানুষের শক্তি স্তরে (Energy level) যাকে জীবনীশক্তি (Vital force) বলা হয়। আমাদের জীবনী শক্তি বিকৃত (deviate) হলেই শরীর ও মনে নানারকম রোগের উৎপত্তি হয়। হৃদপিন্ডে (heart) ছুরি-চাকু চালানো, স্টিলের রিং লাগানো, বৈদ্যুতিক ব্যাটারী লাগানো ইত্যাদি কখনও সঠিক চিকিৎসা হতে পারে না। হার্টের কোন রক্তনালীতে চর্বি জমে ব্লক হয়ে গেলো আরঅপারেশন করে তাতে লোহার পাইপ বসিয়ে দেয়া যায়। কিন্তুএতে একটি ব্লকের হাত থেকে বেঁচে গেলেন সত্য কিন্তু যে-কারণে ব্লকটি সৃষ্টি হয়েছিল, তার কারণটিও রয়েই গেলো। ফলে কিছুদিন পরপর একটার পর একটা ব্লক পড়তে থাকে। হৃৎপিন্ড এবং ব্রেন মানুষের সবচেয়ে সেনসেটিভ অঙ্গ। এগুলোতে ছুরি চালানো এবং লোহা-লক্কড় ফিট করে দেওয়া চরম নির্বুদ্ধিতা। উচ্চ রক্তচাপ (high blood pressure) সহ যাবতীয় হৃদরোগের একটি মূল কারণ হল টেনশন করা এবং শরীরকে আরামে রাখা। ফলে শরীর এবং মনের ক্রিয়াকর্মের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। সুস্থ থাকতে চাইলেও আপনাকে অবশ্যই শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। শিশু-কিশোররা সারাক্ষণ খেলাধুলা, দৌড়াদৌড়ি, হুড়োহুড়ি করার মাধ্যমে শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করছে। এই কারণে শিশু-কিশোরদের সাধারণত অসুখ-বিসুখ অনেক কম হয়। শিশু-কিশোরদের বেশীর ভাগ অসুখের মূল কারণ হলো বেশী বেশী টিকা [vaccine] নেওয়া। স্বামী-স্ত্রীর দৈনন্দিন শারীরিক মিলন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ট শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম। এই কারণে যুবক-যুবতীদেরও সাধারণত অসুখ-বিসুখ অনেক কম হয়। শহুরে লোকদের জীবনে প্রযুক্তির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে শারীরিক পরিশ্রম নাই বললেই চলে। কিন্তু শারীরিক পরিশ্রম ছাড়া টাকা উপার্জন করা সম্ভব হলেও সুস্থ থাকা সম্ভব নয়। যখন আমাদের বয়স চল্লিশের উপরে চলে যায় তখন শারীরিক পরিশ্রম অনেক কমে যায়। ফলে মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হতে থাকে। কৃষক, কুলি, মজুর, রিক্সাচালক ইত্যাদি পরিশ্রমের পেশায় যারা আছেন, তাদেরকে কখনও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হতে দেখেছেন? যে যত বেশী খায়, সে তত বেশী বেশী রোগে আক্রান্ত হয় এবং তত কম বয়সে মৃত্যুবরণ করে।

হৃদরোগের প্রতিকার:
একবার একজন মহৎপ্রাণ শিশু বিশেষজ্ঞের নিকট বলেছিলেন যে, এক বছরের একটি শিশুকে চিকিৎসার জন্য তার নিকট আনা হয়েছিল যার হার্টে একটি ছিদ্র(hole)ধরা পড়েছে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা এক মাস পরে তার হার্টে অপারেশন করে ছিদ্র বন্ধ করার তারিখ দিয়েছেন। ভদ্রলোক ভাবলেন, শিশুটিকে কিভাবে অপারেশনের হাত থেকে বাঁচানো যায় এবং শিশুটির দরিদ্র অভিভাবকদের এতগুলো টাকা কিভাবে বাচাঁনো যায়?তিনি ভাবলেন, শিশুটি তার মায়ের পেটে যখন বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তখন নিশ্চয় কোন ত্রুটির কারণে হৃদপিন্ডের এই স্থানের মাংস বৃদ্ধি পায় নাই এবং এখানে একটি ছিদ্র রয়ে গেছে।

যেহেতু চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবারে তাড়াতাড়ি মাংস বৃদ্ধি পায়, তাই তিনি শিশুটিকে বেশী বেশী করে গ্লুকোজ(glucose) খাওয়ানোর পরামর্শ দিলেন। একমাস গ্লুকোজ খাওয়ানোর ফলে দেখা গেলো চারপাশের মাংস বৃদ্ধি পেয়ে শিশুটির হার্টের ছিদ্র বন্ধ গেছে। ফলে শিশুটি অপারেশনের হাত থেকে বেচেঁ গেলো।কেননা আমাদের শরীর নিজেই হলো তার নিজের সবচেয়ে বড় ডাক্তার।

হোমিও ওষুধ
যদিও সমগ্র লক্ষণ অনুসারে নির্বাচিত যে-কোন হোমিও ওষুধই যে-কোন হৃদরোগ নিরাময় হয়ে যায়, তারমধ্যে নিচের ওষুধগুলি হৃদরোগের চিকিৎসায় বেশী বেশী ব্যবহৃত হয়।
Adonis Vernalis, Amyle Nit, Arnica Mont, Cactus Grandi, Convallaria Majalis, Crataegus Oxyacantha, Digitalis Purpurea, Iberis Amara, Kalmia Latifolia, Lachesis Mutus, Latrodectus Mactans, Laurocerasus, Lilium Tig, Lycopus Virginicus, Naja Tripudians, Natrum Muriaticum, Aurum Metallicum, Vanadium, Spigelia Anthelmintica, Kali Carb, Phosphorus, Scilla, Strophenthus ইত্যাদি।

ডা. মো. শাহিনুর রহমান
বিএঅনার্সএমএ, ডিএইচএমএস-ঢাকা
শেখ বদরুদ্দীন হোমিও চেম্বার
৪২/২ ঢালকানগর লেন গেণ্ডারিয়া ঢাকা-১২০৪
মোবাইল-০১৭১১-১৩৮-১৩৫